প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন, মূল আসামি গ্রেফতার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০৪ পিএম, ২১শে আগস্ট ২০২৫


প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন, মূল আসামি গ্রেফতার
সংগৃহীত ছবি।


রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বন্ধু সাব্বিরকে (২০) হত্যার ঘটনায় মূল আসামি রাব্বিকে (২০) মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


বুধবার (২০ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে ব্যাটারিঘাট এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাব্বিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত রশিও উদ্ধার করা হয়।


আরও পড়ুন: ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত ২


মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুর আনুমানিক ১ টা ১০ মিনিটে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাটারিঘাট এলাকার একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে সাব্বিরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।


রাতের দিকে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।


মামলার তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, হত্যাকাণ্ডে রাব্বি সরাসরি জড়িত। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।


থানা সূত্রে জানা গেছে, আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে রাব্বি স্বীকার করে, প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সে বন্ধু সাব্বিরকে হত্যা করে।


থানা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার রাব্বি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে সে জানায়, প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সে বন্ধু সাব্বিরকে হত্যা করে।। হত্যার পর লাশ গোপন করার জন্য সেটি ময়লার স্তূপে ফেলে রাখা হয়।


কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ প্রেমঘটিত দ্বন্দ্ব। মূলত তারা দুইজন বন্ধু ছিল। তাদের একজনের বাবা নেই, মা অন্য জায়গায় বিয়ে করেছেন। আর আরেকজনের বাবা-মা থেকেও নেই। দুজনেই ময়লা কর্মী। তারা ময়লার ডিপোর ভিতরেই ঘুমাতো। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রেমের টানাপোড়েন জড়িত।


ওসি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ৬ থেকে ৭ মাস আগে গ্রেফতার হওয়া রাব্বি আরেক ময়লাকর্মী মেয়েকে ভালোবাসতো। পরে রাব্বি তার বন্ধু সাব্বিরকে বলে, তুই ওই মেয়েকে বলে দে-আমি ওকে ভালোবাসি। এরপর সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ওই মেয়ে রাব্বিকে প্রত্যাখ্যান করে।


তিনি বলেন, কিছুদিন পর হত্যাকাণ্ডের শিকার সাব্বির ওই মেয়েকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয় এবং বিয়ের কথাও বলে। মেয়েটি তখনই প্রস্তাব মেনে নেয়। এ নিয়েই শুরু হয় দ্বন্দ্ব। দ্বন্দ্ব হওয়ার পর রাব্বি সাব্বিরকে বলে, বন্ধু, আমি তোকে বার বার নিষেধ করেছি, তারপরও তুই আমার এত ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওই মেয়ের সঙ্গে কেন গেলি?


ওসি বলেন, এ ঘটনার দ্বন্দ্ব নিয়ে হত্যাকাণ্ডের প্রায় ২০-২২ দিন আগে ওই মেয়ের সামনেই তাদের মধ্যে মারামারি হয়। তখন মেয়েটি স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, আমি তোমাদের কারও সঙ্গেই থাকবো না, তোমাদের কারও সঙ্গেই আর কথা বলবো না। এরপর টানা ২০-২২ দিন মেয়েটি আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি।


আরও পড়ুন: ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নিয়ে যা বলছে পুলিশ


তিনি বলেন, পরে হত্যাকাণ্ডের দিন রাতে রাব্বি জানতো সাব্বির নেশা করে ময়লার ডিপোতে ঘুমায়। সেই সুযোগেই ঘুমন্ত অবস্থায় সাব্বিরকে রশি দিয়ে রাব্বি হত্যা করে।


সবশেষে ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, এভাবেই প্রেমঘটিত দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হওয়া দ্বন্দ্ব-শত্রুতার শেষ পরিণতি হলো হত্যাকাণ্ড। তবে দ্রুততম সময়ে মূল আসামি গ্রেফতারের মাধ্যমে পুলিশের তৎপরতায় মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।



এসডি/