মাদারীপুরে বিরল প্রজাতির অদ্ভূত প্রাণী উদ্ধার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


মাদারীপুরে বিরল প্রজাতির অদ্ভূত প্রাণী উদ্ধার

মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বালিগ্রামে বিরল প্রজাতির একটি প্রাণীকে আটকে রেখেছে স্থানীয়রা। ইতিপূর্বে এ অঞ্চলে এমন কোন প্রাণী দেখতে পাননি স্থানীয়রা। লম্বা লেজ, ডোরাকাটা ও চোকামুখ বিশিষ্ট প্রাণীটি দেখতে ভিড় করছে শত শত মানুষ। বিরল প্রজাতির প্রাণীটির জীবন বাঁচাতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেছে জেলা প্রশাসন। তবে ইন্টারনেট ঘেটে জানা গেছে প্রাণীটির নাম গন্ধগোকুল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অদ্ভূদ একটি প্রাণীকে একটি মুরগীকে খেতে দেখে স্থানীয় কয়েক যুবক। এসময় মুরগটিকে রক্ষা করতে তারা প্রাণীটির উপর হামলা চালিয়ে প্রাণীটিকে আটক করে। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট যোগাযোগের মাধ্যমে প্রাণীটিকে চিহ্নিত করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানান। গত দুইদিন যাবৎ অদ্ভূত প্রাণীকে বিভিন্ন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন স্থানীয় যুবকরা। 

বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, নিশাচর এই প্রাণীটি লোকালয়ের কাছাকাছি ঝোপ-জঙ্গলে বাস করে। এরা তাল-খেজুর রস, ফল, সবজি ছাড়াও কৃষির জন্য ক্ষতিকর পোকামাড়র ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। মজার বিষয় হলো, বট বা অন্যান্য গাছের ফল খাওয়ায় এদের মলের সঙ্গে নির্গত বীজগুলোর শতভাগ অঙ্কুরোদগম হয়, যা উদ্ভকূল রক্ষায় দারুণ কার্যকরী।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জনবাণীকে বলেন, আপনি বনজঙ্গল বা ঝোপ-ঝাড়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যদি পোলাওয়ের চালের মতো গন্ধ পান তবে বুঝে নেবেন আপনার আশেপাশেই গন্ধগোকুল আছে। এরইমধ্যে বিরল প্রজাতির প্রাণীটিকে সংরক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফরিদপুর আঞ্চলিক বন অফিসকে বলা হয়েছে। শিগগরিই প্রাণীটিকে অবমুক্ত করা হবে।

তিনি বলেন, বনজঙ্গল ধ্বংস, খাদ্যের অভাব, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে প্রকৃতির উপকারী এই প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বিভিন্ন লোকজ ওষুধ ও টোটকা তৈরিতে গন্ধগোকুল হত্যা করা হয়। কিন্তু এসব ওষুধের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং কিছু অসাধু ব্যক্তি দেশের সরল মানুষকে ঠকাচ্ছে। এক সময় দেশে প্রচুর গন্ধগোকুলের দেখা মিললেও বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিবেচনায় এটি পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রাণীটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা কোনো ক্ষতি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

এসএ/