আন্দোলনের প্রয়োজন নেই, ন্যায্য সমাধান হবে: উপদেষ্টা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:১২ পিএম, ২৭শে আগস্ট ২০২৫


আন্দোলনের প্রয়োজন নেই, ন্যায্য সমাধান হবে: উপদেষ্টা
সংগৃহীত ছবি।

আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে পরীক্ষা করে ন্যায্য সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন এ বিষয়ে গঠিত সরকারি কমিটির সভাপতি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান


আরও পড়ুন: প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে ৪ উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটি


বুধবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় কমিটির অপর সদস্য, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও উপস্থিত ছিলেন।


তিন দফা দাবিতে টানা দুই দিন (মঙ্গলবার ও বুধবার) রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি ও অবরোধ পালন করেন বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ ঘেরাওয়েরও চেষ্টা করেন, যার পরপরই পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।


এর মধ্যে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারীদের পেশাগত দাবিগুলোর‌ যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ৮ সদস্যের এ কমিটির সভাপতি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। কমিটিতে চারজন উপদেষ্টা ছাড়াও প্রকৌশলীদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।


ফাওজুল কবির খান বলেন, এটার (আন্দোলন) সূত্রপাত হয় নেসকোতে (নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি) একটা ঘটনা (একজন প্রকৌশলীকে হত্যার হুমকি) ঘটেছিল, সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। শাস্তিমূলকভাবে বদলি করা হয়েছে।



ফাওজুল কবির খান বলেন, দাবি দুদিক থেকে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি এক রকম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি ভিন্ন। সব পক্ষের কথা শুনে ন্যায্য যে সমাধান সেটা আমরা করবো।


তিনি বলেন, এ কথাগুলো এ কারণে বললাম যে তারা দেখে বুঝতে পারে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।


বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, তাদের প্রতি আমাদের বার্তা হলো আপনারা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যান।‌ তাদের প্রতিনিধিদের নিয়েই আমরা তো সিদ্ধান্ত নেবো। কাজেই তাদের তো আর রাস্তায় আন্দোলনের কারণ নেই, কিংবা অন্য কোথাও যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।


কমিটির অন্য সদস্য উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা বসে সমস্যার সমাধান করবো। আমরা হয়তো কালকেই বসে যাবো।


আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির গুলো হলো-


১। নবম গ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং পদ বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রার্থীর কমপক্ষে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। এমনকি বিভিন্ন নামে সমমানের পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।


২। দশম গ্রেডের কারিগরি পদ বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।


আরও পড়ুন: বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাইয়ে কমিটি গঠন


৩। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি না থাকলেও ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। 


আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা গত ছয় মাস ধরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দাবি জানিয়ে আসলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাদের ভাষায়, ‘আমরা রাস্তায় আসতে চাইনি, সরকার আমাদের বাধ্য করেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’


এসডি/