মৌলভীাবজার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জনবল সংকট
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৩২ পিএম, ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

মৌলভীবাজারে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো জনবল সংকট এবং অপর্যাপ্ত অবকাঠামোর কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে না। বিশেষ করে গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষরা পরিবার পরিকল্পনা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জেলার ও উপজেলার পাঁচজন মাঠকর্মী থাকার কথা থাকলেও এ চিত্র মোটামুটি জেলার প্রতিটি ইউনিয়নেরই। শুধু জনবল সংকট নয় আছে ওষুধের সংকটও। হাসপাতালে এই দুর্দশা দেখার কেউ দেখে নেই।
জানা যায়, এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাগজে-কলমে বিভিন্ন পদে থাকলেও হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেই। কবে পরিপূর্ণ জনবল মিলবে তাও সঠিকভাবে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগীরা এসে শুধু ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে খালি হাতে বাড়ি চলে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের সঙ্গী জনবল সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। গবাদিপশু, অবাধে বিচরণ করছে হাসপাতালের আঙিনায়। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো নীরব অবস্থায় আধুনিক ভবন দাঁড়িয়ে আছে।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালায় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২২ লাখ মানুষের বসবাস মৌলভীবাজারে। কিন্তু এ জনসংখ্যার বড় একটি অংশ পরিবার পরিবকল্পনার সেবার আওতার বাইরে। মৌলভীবাজার জেলায় ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থাকার কথা থাকলেও জেলায় মোট ৭টি উপজেলা রয়েছে এবং মৌলভীবাজারের ৬৭টি ইউনিয়নের বিপরীতে ৪৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে।
ভুক্তভোগী রাশেদা বেগম জানান, এক বছর ধরে প্রয়োজনীয় ওষুধ নাই। তাহলে আমাদের সেবা করবে কিভাবে। চেয়ার খালি থাকে। আমরা গরিব টাকা নাই, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ পাইলে আমরা গরিবরা বাঁচতাম।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রতে আসা রোগী জলি বেগম বলেন, সরকারি ঔষধ ও পাওয়া যায় না, ডাক্তার ও পাওয়া যায় না। গর্ব নিয়ে গেছি, আয়রন, ভিটামিন কিছু দেয় না। সময়মতো ডাক্তার পাই না।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এর আয়া জাহানারা বেগম বলেন, এখন ওষুধ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি রোগীরা জেনে গেছেন। এ জন্য সেবা নিতে লোকজন কম আসেন। আমার স্যারে করেন ৪ জায়গায়, আমার মাসি ও করেন ৪ জায়গায়। মাসি আছিলা না, তখন শুধু আমি একলা থাকতাম।
পরিবার কল্যাণ কেন্দে পরিদর্শিকা সান্তনা রানী দেব জানান, গত ৮ মাস ধরে আমরা রোগীদের ঔষধ সরবরাহ করতে পারছি না, তবে আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কিন্তু অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য হয়ে আছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এর মেডিকেল অফিসার উপসহকারী নীল কান্ত পাল বলেন, ইউনিয়ন স্তরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন মেডিক্যাল অফিসার, উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, পিয়ন ও নৈশপ্রহরীর পদ রয়েছে। আমি নিজেও চারটি উপজেলার দায়িত্বে আছি।
মৌলভীবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ গুলোতে বর্তমানে মোট ৫টি কেটাগরিতে ৫ জন কাজ করার কথা, সেখানে জনবল কম হওয়ার কারণে আমরা অন্য জায়গা থেকে আমরা চালু রাখছি। আমাদের ঔষধ প্রায় বছরে কাছাকাছি সময় দেওয়া হতো। আমরা এ মাসেই পাব বলে আশা রাখছি। আশা করছি নতুন নিয়োগ হলে শূন্য পদে কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে এবং সমস্যার সমাধান হবে।
এসএ/