সাতক্ষীরা স্থলবন্দর ধ্বংস চক্রান্ত; নেপথ্যে কারণ কী?


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সাতক্ষীরা স্থলবন্দর ধ্বংস চক্রান্ত; নেপথ্যে কারণ কী?

সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি রাজনৈতিক চক্র। বন্দর ধ্বংস করতে ওই চক্রটি ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কমিটি নিয়ে চালছে নানা ষড়যন্ত্র। আর এ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে ভাঙা গড়ার খেলা চলছে সাতক্ষীরা ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কমিটি। স্থলবন্দর ধ্বংসের খেলায় মেতে ওঠার অভিযোগ উঠেছে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কিছু অসাধু নেতৃবৃন্দ ও খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, সিঅ্যান্ডএফ সদস্য এজাজ আহমেদ স্বপনের দায়ের করা হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশনের প্রেক্ষিতে শ্রম আদালতের নির্দেশনায় গত ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে এজাজ আহমেদ স্বপনকে আহবায়ক এবং আশরাফুজ্জামান আশু, মিজানুর রহমান, মাকসুদ খান ও রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীকে সদস্য করে পাঁচ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এজাজ আহমেদ স্বপনের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে শ্রম আদালতের নির্দেশনায় গত ১৪ মার্চ তার পরিবর্তে মাকসুদ খানকে আহবায়ক করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ঘোষণার ৮ দিন পর স্বপন তার লাইসেন্স জটিলতা কাটিয়ে উঠলে হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের আদেশের প্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ শ্রম আদালত কর্তৃক তাকে আবারও আহবায়ক পদে পূণঃবহাল করা হয়। তার কয়েকদিন পরই শ্রম আদালতের নির্দেশনায় আহবায়ক এজাজ আহমেদ স্বপনকে সরিয়ে মিজানুর রহমানকে আহবায়ক করে চার সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

আর প্রতিবারই কমিটি ভাঙা গড়া খেলার সময় গোপনে নেওয়া হয় লাখ লাখ টাকা। এরপরও ষড়যন্ত্র থেমে থাকে না জেলা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপনের বিরুদ্ধে। তাকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে ভোমরা স্থল বন্দরকে ধ্বংস করতে এ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তারা। শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের আহবায়ক দায়িত্ব থাকা কালে বন্দরের ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ভারতে ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধে বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে তোলেন। এছাড়া বন্দরের শ্রমিকদের জন্য পানির পাম্প নির্মাণ, ৫ লক্ষ টাকার টয়লেট নির্মাণসহ বন্দরে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেন তিনি।

ঠিক সে সময় ষড়যন্ত্র শুরু হয় স্বপনের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত ২৯ মার্চ আহবায়ক কমিটির ৪ সদস্য এক বৈঠকে বসে এজাজ আহমেদ স্বপনকে অপসারনসহ তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, তহবিল তছরুপ, দুর্নীতি এবং সঠিক ভোটার তালিকা করে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যর্থতার অভিযোগ আনেন। এরপর শ্রম আদালতের নির্দেশনায় গত ১১ এপ্রিল মিজানুর রহমানকে তার স্থলাভিষিক্ত করেন। 

এব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও ভোমরা সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সাবেক আহবায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন জনবাণীকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। কমিটির অর্থ উত্তোলনে দুজনের স্বাক্ষরে অর্থ উত্তোলন করতে হয়। অতএব অর্থ আত্মসাত ও দুর্নীতির কোন প্রশ্নই আসেনা। তাছাড়া আমি কমিটির সকলের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া আমি আহবায়কের দায়িত্বে থাকা কালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করি। কিন্তু নির্বাচনের তারিখ আসার পূর্বেই আমাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

এদিকে ভোমরা সিএ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের বারবার কমিটি পরিবর্তন নিয়ে সাধারণ সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলছেন, প্রতিবারই এই কমিটি গঠন নিয়ে চলছে টাকার খেলা।

এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমান জনবাণীকে বলেন, কমিটির বাকী সদস্যরা স্বপনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। এ জন্য কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। কোন আর্থিক লেনদেন করা হয়নি।

এসএ/