বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মানবতার জন্য সতর্কবার্তা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মানবতার জন্য সতর্কবার্তা

বিশ্বে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা দ্রুতগতিতে বাড়ছে বলে সতর্ক করে দিয়ে জাতিসংঘ বলেছে এজন্য নিঃসন্দেহে দায়ী মানুষের কর্মকাণ্ড। জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার কমিটি বা আইপিসিসি'র এক গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্টে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এখন যে চরম তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড ভারী বৃষ্টিপাত, খরা বা সাইক্লোন হতে দেখা যাচ্ছে-তাতে জলবায়ুর এই পরিবর্তন স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।শিল্পযুগের আগে পৃথিবীপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা যা ছিল, আগামী দু'হাজার তিরিশ সালের মধ্যে সেই তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে।এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এর আগে যতটা সময় লাগবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, এখন বলা হচ্ছে তার দশ বছর আগেই সেটা ঘটে যাবে।জাতিসংঘ বলছে, এর ফলে সারা বিশ্বে চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একমাত্র কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়েই এই পরিবর্তনের গতি কমানো সম্ভব।মার্কিন প্রেসিডেন্টে জলবায়ু সম্পর্কিত বিশেষ দূত জন কেরি বলেছেন, এখন বিশ্বের জন্য প্রকৃত ও জোরালো পদক্ষেপ নেবার সময় এসে গেছে।২০১১-২০২০ এই এক দশক সময়কালে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১৮৫০-১৯০০ এই সময়কালের চেয়ে ১.০৯ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে ।১৮৫০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত থাকা রেকর্ড অনুযায়ী গত পাঁচ বছর ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে উষ্ণতম। ১৯০১-১৯৭১ এই সময়কালের সাথে তুলনায় সমুদ্রের পানির স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির সাম্প্রতিক হার প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।১৯৯০এর দশক থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপি হিমবাহগুলো গলে যাওয়া, এবং আর্কটিকে সামুদ্রিক বরফস্তর কমে যাওয়া-এ দুটির পেছনে মানুষের কর্মকাণ্ডই যে দায়ী, এমন সম্ভাবনা খুবই জোরালো (৯০%)।এটা এখন প্রায় নিশ্চিত যে ১৯৫০এর দশকের পর থেকে অতিরিক্ত গরম পড়া, এবং তাপপ্রবাহ অনেক বেশি ঘন ঘন ঘটছে। অন্যদিকে ঠাণ্ডা পড়ার তীব্রতা কমে যাচ্ছে এবং তা ততটা ঘন ঘন হচ্ছে না।

জাতিসংঘের বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের কর্মকান্ড পরিবেশের ওপর যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা মানবসমাজের জন্য একটি লাল সংকেত।এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রের পানির স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাণ ২ মিটারের কাছাকাছি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন আর উড়িয়ে দেয়া যায় না। এক রিপোর্টে বলা হয়, অতীতে এবং ভবিষ্যতে যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ঘটবে-তার ফলে জলবায়ুতে এমন সব পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে যা আর ঠেকানো যাবে না। এর প্রভাবে কয়েক শতাব্দী বা সহস্রাব্দ ধরে পৃথিবীর মহাসাগর, জমে থাকা বরফের স্তর ও সাগরের পানির স্তরের ওপর এর প্রভাব দেখা যাবে।তবে রিপোর্টে এ কথাও বলা হয়েছে যে - কার্বন ডাইঅক্সাইড ও মিথেনের মত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বড় আকারে কমাতে পারলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে হয়তো স্থিতিশীল অবস্থায় আনা যাবে-এমন নতুন আশাবাদও সৃষ্টি হয়েছে।বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং শৈত্যপ্রবাহের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ধরনের দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে। সেটি হতে পারে তাপমাত্রা বাড়া, খরা, বন্যা, সাইক্লোন, টর্নেডো, ভূমিকম্প, নদীভাঙনসহ নানান দুর্যোগ। তার মধ্যে তাপমাত্রা বাড়াই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে পৃথিবীকে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, লবণাক্ততার কারণে। যার প্রমাণ আমরা বার কয়েক পেয়েছিও। সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পান ও ইয়াসের তাণ্ডবলীলায় মারাত্মক দুর্যোগের শিকার হয়েছিল বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে ইয়াস ভয়ংকরভাবে আঘাত হানলেও সামান্য দিক পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সেই যাত্রায় কিছুটা রক্ষা পেয়েছিল। তথাপিও উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির খবর আমরা জানতে পেরেছি। এসব প্রাকৃতিক তাণ্ডব ঘটছে শুধু বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলেই; যার মূল কারণই হচ্ছে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ। 

গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্য বিজ্ঞানীরা মানুষকেই দায়ী করেছেন। যার জন্যই মূলত বৈশ্বিক উষ্ণায়ন অব্যাহত রয়েছে আর পরিবর্তন ঘটছে জলবায়ুর; যা আমাদের কাছে জলবায়ুর সংকট হিসেবে পরিচিত।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ধারণা থাকা সত্ত্বেও উন্নত দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু কাগজ-কলমের মধ্যেই তাদের উদ্যোগ সীমাবদ্ধ রয়েছে। উন্নত দেশের কর্মকাণ্ডে সমগ্র পৃথিবী আজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জানা যায়, বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব প্রান্তসীমা ৩৫০ পিপিএম ছাড়িয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক ৩৯৮ দশমিক ৫৮ পিপিএম ঘনমাত্রায় পৌঁছে গেছে, যা পৃথিবীর অস্তিত্বের প্রতি মারাত্মক হুমকিই বলা যায়।জাতিসংঘ কর্তৃক জলবায়ুবিষয়ক এবং বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ বন্ধে ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওডি জেনিরোতে কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। সেখানে গঠিত হয় জলবায়ুবিষয়ক জাতিসংঘ কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি)। ওই কনভেনশনে ১৫০ দেশকে এই নতুন বিধান মেনে চলতে রাজি করানোর প্রচেষ্টা চালানো হয়। কার্বন ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ প্রশমনে বাধ্যতামূলক করতে প্রটোকল ঘোষণা করা হয়। মূলত ওই সময় থেকেই সদস্যদেশগুলো প্রতিবছর মিলিত হওয়ার জন্য সম্মত হয় এবং প্রতিবছর মিলিত হচ্ছেও। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না। গাছের গোড়া কেটে পানি ঢালার মতো দরিদ্র দেশকে কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে শুধু। অথচ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশের কারণে মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হচ্ছে। জানা গেছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ইতিমধ্যেই লবণাক্ততা বেড়ে মানুষের জীবন ও জীবিকায় মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। 

পরিবেশবিজ্ঞানীদের অভিমত, আর মাত্র ৪৫ সেন্টিমিটার সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লেই উপকূলীয় অঞ্চলের ১০ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যাবে। তবে এই অভিমত অপ্রতিষ্ঠিত হিসেবে ধরে নিচ্ছে অন্য গবেষক দল। কারণ, ইতিমধ্যে জানা গেছে, ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন জায়গা গুলোতে ভারসাম্য বজায় থাকবে সমুদ্রে উচ্চমাত্রার পলির আগমনে। তার কিছুটা প্রমাণও মিলেছে। যেমন হাতিয়া অঞ্চলসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল আয়তনের চর জেগেছেও।অন্যদিকে ২০০৫ সালে ‘আইপিসিসি’ জানিয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বাড়লে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ২১ শতাংশ লবণাক্ত জলে সয়লাব হয়ে যাবে। নানা ধরনের তর্ক-বিতর্কের ফলে সর্বশেষ যা আমরা অবগত হয়েছি তা হচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ মহাদুর্যোগের মুখোমুখি হবে, যা অবধারিত সত্য কথা। আর এই মহাদুর্যোগের জন্য দায়ী হচ্ছে শুধু শিল্পোন্নত দেশের খামখেয়ালিপনা। শিল্পোন্নত দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস অধিকহারে নিঃসরণ করে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়িয়ে হিমবাহর চাঁই গলতে ত্বরান্বিত করছে। ফলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আরও কিছু দেশ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। সেই বিপর্যয় থেকে আদৌ উত্তরণ মিলবে কি না, তাতে সন্দিহান আমরা। যদি বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়, তবে আমরা এই মহাদুর্যোগ থেকে উত্তরণ পাব হয়তো। তাই বিশ্ববিবেকের কাছে আমাদের আরজি, সময় থাকতে দ্রুত পদক্ষেপ নিক; কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে জলবায়ুযুদ্ধে বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ গুলোকে বিজয়ী করতে সাহায্য করুক। উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবজাতির জন্য লাল সংকেত হিসেবে অভিহিত করেন। জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ে জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বিশ্ব মোড়লেরা ততটা সরব নয়; তা আমরা উপলব্ধি করছিও। তারপরেও আমাদের বিশ্বাস, জলবায়ু সংকটের লাল সংকেত পেয়ে এবার তাঁরা সরব হবেন।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে ২০১৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার ৯৬৫ বর্গকিলোমিটারের হিমবাহের চাঁইয়ে চিড় ধরতে দেখেছেন গবেষকেরা। ২০২০ সালের এক রিপোর্টে জানা যায়, এক বছরে প্রায় ৫৩২ বিলিয়ন টন বরফ গলেছে গ্রিনল্যান্ড থেকে। ২০১৯ সালে গ্রিনল্যান্ডে তিন কিলোমিটারের বরফের চাঁই ভেঙে পড়েছে। তাতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ শতাংশ পানি বেড়েছিল। বরফের চাঁই গলতে শুরু করায় সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে মোড় নিয়েছে। সমুদ্রে প্রতি সেকেন্ডে ৬টি অলিম্পিক সুইমিংপুলের সমপরিমাণ জল পড়ছে। তাতে দেখা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টন পানির পরিমাণ বাড়ছে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাঁই গলার পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করে ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব লিনকন এক গবেষণায় জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলার কারণেই ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বের সমুদ্রস্তরের উচ্চতা ১০-১২ সেন্টিমিটার বাড়বে।অপরদিকে নেচার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা গেছে, আর্কটিক মহাসাগরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়েছে, যা বরফ যুগেও দেখা গিয়েছিল। উল্লেখ্য, সমুদ্র জলের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও বাড়তে থাকে। গত ৪০-১০০ বছরের মধ্যে দেখা গেছে, গ্রিনল্যান্ডের তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি বেড়েছে। আরেকটি দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতেই উত্তর মেরুর পূর্বাঞ্চলের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে, সেখানকার তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে যে হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাবে। আর সেটি হলেই পৃথিবী মহাদুর্যোগের মুখোমুখি পড়বে।সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং বন্যা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মত উপকূলীয় দেশগুলিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। নেপালে তাপমাত্রা বাড়ার জেরে হিমবাহ গলে যাচ্ছে। আফগানিস্তান, ভূটানে দেখা দিচ্ছে খরার প্রকোপ। 

এখানেই শেষ নয়, জলবায়ুর প্রভাব পড়তে পারে পরিযায়ীদের ওপর। ২০১৮ সালে বিশ্ব ব্যাংকের একটি সমীক্ষা বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার ৪০ মিলিয়ন পরিযায়ী, যাদের মধ্যে বাংলাদেশেরই শুধু ১৩ মিলিয়ন, তাঁরা একটি নির্দিষ্ট জলবায়ু নীতির সমস্যায় ভুগবেন। গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনের ফলে শহরে সম্পদের সংকট দেখা দিতে পারে, যা মানুষের মৌলিক প্রয়োজনীয়তার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। আইপিসিসি রিপোর্টে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে নগরায়ণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বন্যাকে আরও ত্বরান্বিত করবে। তথাকথিত দুর্বল জনগোষ্ঠী যেমন পাকিস্তানের বন্যায় গৃহচ্যুত পশতুন, ভারতে খরার জেরে বাস্তুচ্যুত মুসলমান, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে বন্যাকবলিত শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনায় গণআন্দোলন, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সহিংসতা বাড়তে পারে। আইপিসিসির প্রতিবেদনের অন্যতম প্রধান বার্তা হল, শক্তিশালী নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে জলবায়ু বিপর্যয় এড়ানোর এখনও সময় আছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি এই জাতীয় অনেক নীতি প্রণয়ন করলেও এর দুর্বল প্রয়োগ এবং অপর্যাপ্ত অর্থের জেরে তা বাস্তবায়িত হয় নি। আরও কিছু প্রয়োজনীয় সংশোধনী দরকার- যেমন অ-কৃষি জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি এবং জলবায়ু নিয়ে যারা কাজ করছেন সেই সমস্ত সামনের সারিতে থাকা কর্তাদের আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের মানসিকতা। যদিও এতে নানারকমের কূটনৈতিক বাধা আসবে, তবুও হাল ছাড়লে চলবে না। কারণ বিশ্ব পরিবেশগত স্থায়িত্ব তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি একেবারে নিচের দিকে রয়েছে। আগামী দশকগুলিতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভূখণ্ড ছাড়াও পানি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হতে পারে এবং আফগান শরণার্থীরা কেবল যুদ্ধ নয় খরা থেকে বাঁচতেও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। তাই ভূবিজ্ঞানীরা সবাইকে সতর্ক করে বলছেন,