স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড, দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড, দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রথম স্ত্রীকে হত্যাসহ গুমের উদ্দেশ্যে লাশ পুড়িয়ে আলামত নষ্ট করার অপরাধে স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের ১০ বছরের সশ্রমক কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩। 

গত বুধবার (১১ মে) দুপুরে দিনাজপরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক এএসএম রেজাউল বারী ওই আদেশ দিয়েছেন। 

দণ্ড-প্রাপ্তরা হলেন, ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর এলাকার দক্ষিণ সুজাপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সাধনানন্দ চৌধুরী দ্বিতীয় স্ত্রী প্রতিমা রানী চৌধুরী (৪৫), তার ছেলে আকাশ চৌধুরী (২৭) ও ফুলবাড়ী পৌর এলাকার কাটাবাড়ী গ্রামের কার্তিক চন্দ্র মহন্তের ছেলে কাজল মহন্তকে (৩১) মৃত্যুদ- এবং একই মামলায় নিহত তপতি রানী চৌধুরীর স্বামী উপজেলার পৌর এলাকার দক্ষিণ সুজাপুর গ্রামের মৃত বিবেকা নন্দ চৌধুরীর ছেলে পল্লী চিকিৎসক সাধনানন্দ চৌধুরীকে (৬৩) আমৃত্যু কারাদ- ও পৌর এলাকার চকচকা গ্রামের রবীন্দ্র নাথ দাসের ছেলের জীবন চন্দ্র দাসকে (৩০) ১০ বছরের সশ্রম কারাদ- ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, সাধনা নন্দ চৌধুরী তার প্রথম স্ত্রী তপতি রানী চৌধুরীর সাথে সংসার পরিচালনা করার সময় ২০১৪ সালের দিকে প্রতিমা রানী চৌধুরীকে দ্বিতীয় বিয়ে করে পৃথকভাবে বসবাস করতেন। এ সময় তপতি রানী চৌধুরীকে ভরণ-পোষণ দিতেন না সাধনা নন্দ চৌধুরী। এসব নিয়ে প্রতিনিয়তই ঝগড়া বিবাদসহ পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এরই মধ্যে গত ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল রাত ৯ টার পর থেকে স্বামী, সতিন ও সতিনের ছেলেসহ ৫ জন মিলে তপতি বানী চৌধুরীকে শারীরিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে ওই ৫ জন মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ উত্তর কৃষ্ণপুর গামী পাকা রাস্তার দক্ষিণ পাশে সুজাপুর গ্রামে সন্দীপ মাস্টারের বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা শুভ নন্দ চৌধুরী বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগপত্র আদালতে প্রদান করেন। মামলার ৪ জন আসামী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। পরে আদালাতে মামলাটি চলাকালে ২২ জন স্বাক্ষী সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী পাবলিক প্রসিউকিউটর অ্যাড. রবিউল ইসলাম, এপিপি আতাউর রহমান এবং আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. হামিদুল ইসলাম। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবলিক প্রসিউকিউটর অ্যাড. রবিউল ইসলাম বলেন, আদালতের এমন রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। 

মামলার বাদী নিহতের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা শুভ নন্দ চৌধুরী এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আদালতে ন্যায্য বিচার পেয়েছি। ভবিষ্যৎতে যেন আর কাউকে এভাবে মাতৃহারা হতে না হয়। 

এসএ/