পাসপোর্টে ঠিকানা বিভ্রান্তি: মালয়েশিয়ায় হিমঘরে বাংলাদেশির মরদেহ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মালয়েশিয়ায় হাসপাতালের হিমঘরে এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ পড়ে আছে। পাসপোর্ট কিংবা বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। পাসপোর্টে ঠিকানা বিভ্রান্তে হিমঘরেই ১ মাস ধরে পড়ে আছে মরদেহটি।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র বলছে, গত ১৫ এপ্রিল এই বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে মারা যান। ওই সময় থেকেই তার মরদেহ কুয়ালালামপুর হাসপাতালের হিমঘরে। পরিবারের সম্মতি পেলে মরদেহ এদেশে দাফন করা হবে। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় মরদেহর সুরাহা করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, মরদেহের সঙ্গে যে পাসপোর্টটি পাওয়া গেছে সেটি মালয়েশিয়ায় কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্ভারে চেক করা হয়েছে। পাসপোর্টটি ভুয়া। কারণ পাসপোর্টে লেখা আছে হারুনর রশীদ, বাড়ি বরিশাল। কিন্তু সার্ভারের রেকর্ডে আছে ইব্রাহিম নামে। ঠিকানা অন্য এলাকার। মরদেহের সঙ্গে পাওয়া কাগজপত্র ভুয়া। স্থায়ী ঠিকানা কোনো কাগজে সিরাজগঞ্জ আবার কোনোটায় নরসিংদী পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি নাসির মিয়া বলেন, তার বাড়ি নরসিংদী জেলায় হতে পারে। তাকে আজ থেকে ৩ বছর আগে জেল থেকে বের করা হয়েছিল। কিন্তু নাসির মিয়ার এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। পরিচয় শনাক্ত জটিল হয়ে পড়ছে।
‘কারণ ওই মরদেহের সঙ্গে যে দু’জন বাংলাদেশি ছিলেন তারা বিভিন্ন জায়গায় দৌড়-ঝাপ করতে হবে তাই তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। কারণ একটি লাশ দাফন করা অথবা দেশে পাঠাতে হলে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।’
মালয়েশিয়ায় কেউ আহত-নিহত হলে পুলিশ রিপোর্ট হয়। হাসপাতালে ডাটা সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে গত ১৫ এপ্রিল কুয়ালালামপুরের একটি এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মালয়েশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে সে যে কোনো দেশের নাগরিক হোক না কেন তাকে মালয়েশিয়ায় দাফন করা হয়।
তবে এখানে দাফনের আগে মরদেহের পরিবারের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। যদি তার পরিবারের সন্ধান না পাওয়া যায় তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর বেওয়ারিশ হিসেবে মরদেহ দাফন করতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি চাওয়া হয়।
মালয়েশিয়া বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা মো. জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, আমাকে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অজ্ঞাতনামা এক বাংলাদেশির মরদেহ পড়ে আছে।
পরে খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানতে পারি তার সঙ্গে যে পাসপোর্টটি রয়েছে সেটি নকল। ওই পাসপোর্ট নিয়ে দূতাবাসে যাওয়ার পর কর্মকর্তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন এর ছবির সঙ্গে মরদেহের ছবির কোনো মিল নেই।
এ ব্যাপারে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) মো. নাজমুল সাদাত সেলিম বলেন, পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অবশ্যই সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জি আই/