বজ্রপাত: কোরআন হাদিস কী বলে ?


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বজ্রপাত: কোরআন হাদিস কী বলে ?

পবিত্র কুরআনুল কারিমে বজ্রপাতের মৌলিক কারণ বর্ণনা করা হয়েছে সুস্পষ্টভাবে। কুরআন মাজিদের একটি সূরার নাম রা’দ। যার অর্থই হচ্ছে বজ্র।

কুরআন মাজিদের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, বজ্র হচ্ছে আল্লাহতায়ালার একটি শক্তিশালী নিদর্শন। এর মাধ্যমে তিনি পৃথিবীবাসীকে ধমক দেন। সতর্ক করেন। ইরশাদ হয়েছে, বজ্র তাঁরই (আল্লাহর) তাসবিহ ও হামদ জ্ঞাপন করে এবং তাঁর ভয়ে ফেরেশতারাও (তাসবিহরত আছেন)। তিনিই গর্জমান বিজলি পাঠান তারপর যার ওপর ইচ্ছা তাকে বিপদরূপে পতিত করেন। আর তাদের (কাফেরদের) অবস্থা এই যে, তারা আল্লাহ সম্বন্ধেই তর্কবিতর্ক করছে, অথচ তাঁর শক্তি অতি প্রচণ্ড;। (সূরা রাদ : ১৩)।

মানুষের কৃতকর্মই বজ্রপাতের মৌলিক কারণ। অত্যাচার, নির্যাতন, সুদ, ঘুস, জিনা, ব্যভিচার দুর্নীতি, অশ্লীলতা হেন অপরাধ নেই যা আজ সমাজময় ছড়িয়ে পড়ছে না। পাপের সমুদ্রে আকণ্ঠ ডুবে আছি আমরা। আমাদের কৃতকর্মের কারণেই আজ সর্বত্র বিপর্যয়।

ইরশাদ হয়েছে, মানুষ নিজ হাতে যা কামায়, তার ফলে স্থলে ও জলে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে, আল্লাহ তাদেরকে তাদের কতক কৃতকর্মের স্বাদ গ্রহণ করাবেন সে জন্য : হয়তো (এর ফলে) তারা ফিরে আসবে। (সূরা রুম, আয়াত : ৪১)।

আমরা যদি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহতায়ালার ইবাদতে নিমগ্ন থাকি তাহলে আল্লাহ আমাদের সবাইকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করবেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের প্রবল পরাক্রমশালী প্রভু বলেছেন, যদি আমার বান্দারা আমার বিধান মেনে চলত, তবে আমি তাদের রাতের বেলায় বৃষ্টি দিতাম, সকালবেলায় সূর্য দিতাম এবং কখনো তাদের বজ্রপাতের আওয়াজ শোনাতাম না।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৭০৮)।

বজ্রপাতে করণীয়

আমাদের উচিত সব সময় তাওবাহ ইস্তিগফার করে পাক পবিত্র জীবনযাপন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। পাশাপাশি বজ্রপাত থেকে বাঁচতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র সুন্নাহর অনুসরণ করা।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এই দোয়া পড়তেন-আল্লাহুম্মা লা তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা ওয়ালা তুহলিকনা বিআজাবিকা ওয়া আফিনা ক্বাবলা জালিকা (হে আল্লাহ! আপনি ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের মেরে ফেলবেন না। শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এ বজ্রপাতের আগেই আমাদের হেফাজত করুন) মুসনাদে আহমদ : হাদিস-৮৭০৮।

হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) তার তাফসির গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ইবনে আবি জাকারিয়া থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রের আঘাতপ্রাপ্ত হবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ২৯২১৩)।

জি আই/