ডেসটিনির ৪৬ আসামির কাকে কত বছর কারাদণ্ড দিলো আদালত?
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড একই সাথে ২০০ কোটি টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের চার বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড় এই মামলায় বাকি ৪৩ আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
আন্যান্য ৪৩ আসামিদের মধ্যে- মোহাম্মদ হোসেনের ১০ বছর ও ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর কারাদণ্ড। মো: গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ উর রহমান, মেজবাহ উদ্দিন স্বপন প্রত্যেককে ১০ বছর ও ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছর ৬মাসের কারাদণ্ড। সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেনের ৯ বছর ও ৩০ কোটি টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছর কারাদণ্ড। ইরফাদ আহম্মেদ সানীর ৯বছর ও ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ২ বছর ৫ মাস। মিসেস ফারহা দিবা, মিসেস জমসেদ আরা চৌধুরী, ইঞ্জি: শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস প্রত্যেককে ৮বছর ও ৪০ কোটি টাকা অনাদায়ে ২ বছর কারাদণ্ড। মোহাম্মদ জাকির হোসেন, আজাদ রহমান আকবর হোসেন সুমন উভয়কে ৯ বছর ও ১ কোটি ১৫ লক্ষ অনাদায়ে ২ বছর ৬ মাস কারাদণ্ড। মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম খান ( রুবেল) উভয়কে ৮বছর ও ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ২বছর ৬মাস। মোহাম্মদ সুমন আলী খান ৯বছর ও কোটি ২৫ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ২ বছর ৬ মাস। শিরিন আক্তার, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম সরকার উভয়কে ৮ বছর ও ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ২ বছর ৬ মাস। মোহাম্মদ মজিবুর রহমান ৮ বছর ও কোটি ২৫ লক্ষ অনাদায়ে ২ বছর ৬ মাস। লে: কর্নেল (অব:) মোহাম্মদ দিদারুল আলম ৮ বছর ও ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ১ বছর। ড. এম হায়দারুজ্জামান ৬বছর ও ১০ কোটি টাকা অনাদায়ে ১ বছর ৬ মাস। মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ৬ বছর ও ৫ কোটি টাকা অনাদায়ে ১ বছর। মো: সফিউল ইসলাম ৭ বছর ও ১০ কোটি টাকা অনাদায়ে ১ বছর ৬ মাস। জিয়াউল হক মোল্লা ৫ বছর ও ১০ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ১ বছর। ওমর ফারুক ৫ বছর ও ২৫ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ১ বছর। সুনীল বরন কর্মকার ৮ বছর ও ৫ কোটি ২ বছর। মো: ফরিদ আক্তার ৮ বছর ও ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অনাদায়ে ২ বছর। এম সহিদুজ্জামান চয়ন ৮ বছর ও ১৫ কোটি টাকা অনাদায়ে ২ বছর। মো: আবদুর রহমান তপন ৭ বছর ও ১ কোটি টাকা অনাদায়ে ১ বছর। মেজর (অব:) সফিকুজ্জামান খান ৫ বছর ও ১ কোটি টাকা অনাদায়ে ১ বছর। এস এম আসানুল কবির (বিপ্লব), এইচ এম আতাউর রহমান ৮ বছর ও ১০ কোটি টাকা অনাদায়ে ২ বছর। জি এম গোলাম কিবরিয়া মিল্টন ৮ বছর ও ৫ কোটি টাকা অনাদায়ে ২ বছর। মো: আতিকুর রহমান ৭ বছর ও ৫ কোটি টাকা অনাদায়ে ২ বছর। খন্দকার বেনজীর আহম্মেদ, এ কে এম মফিউল্লাহ, শাহ আলম, মো: দেলোয়ার হোসেন প্রত্যেককে ৭ বছর ও ১ কোটি টাকা অনাদায়ে ১ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
এর আগে ২৭ মার্চ দুদক ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে এই দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
মানিলন্ডারিংয়ের দুইটি মামলায় ২০১৪ সালের ৪ মে দুই মামলায় চার্জশিট দাখিল করে দুদক। চার্জশিটে কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় আসামি ৪৬ জন এবং ট্রি প্ল্যানটেশন মামলায় আসামি ১৯ জন। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনসহ ১৪ জনের নাম দুই মামলায় থাকায় মোট আসামি ৫১ জন।
আসামিদের মধ্যে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন ও লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম ১০ বছর ধরে কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন আসামি লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, মিসেস জেসমিন আক্তার (মিলন), জিয়াউল হক মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম রুবেল। বাকি ৪৪ জন আসামি এখনো পলাতক।
পলাতক আসামিরা হলেন- ডেসটিনির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ফারাহ দীবা, সাঈদ-উর-রহমান, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, জমশেদ আরা চৌধুরী, ইরফান আহমেদ, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, এসএম আহসানুল কবির, জুবায়ের হোসেন, মোসাদ্দেক আলী খান, আবদুল মান্নান, আবুল কালাম আজাদ, আজাদ রহমান, মো. আকবর হোসেন সুমন, মো. সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মো. মজিবুর রহমান, ড. এম হায়দারুজ্জামান, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, মো. শফিউল ইসলাম, ওমর ফারুক, সিকদার কবিরুল ইসলাম, মো. ফিরোজ আলম, সুনীল বরণ কর্মকার ওরফে এসবি কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান তপন, মেজর (অব.) সাকিবুজ্জামান খান, এসএম আহসানুল কবির (বিপ্লব), এএইচএম আতাউর রহমান রেজা, গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, মো. আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমেদ, একেএম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. শফিকুল হক।
মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। মামলাটিতে আদালত চার্জশিটে থাকা ৩০৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
এস এ ই/ওআ