সয়াবিন চাষে ফটিকছড়ির কৃষকদের সাফল্য
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পরীক্ষামূলক সয়াবিন চাষে বাজিমাৎ করেছেন কৃষকরা। তৈল জাতীয় রবি শস্যটি চাষ করে আশানুরুপ ফলনে অর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় চলতি মৌসুমে উপজেলার কয়েকজন কৃষক ৩ হেক্টর জমিতে প্রথমবারের মতো সয়াবিন চাষ করে সফল হয়েছেন। তাদের দেখাদেখিতে এখন সয়াবিন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অন্যরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের কৃষকরা এতোদিন সয়াবিন চাষ সম্পর্কে অবগত ছিলনা। যার কারণে কোন সময়ে সয়াবিন চাষে আগ্রহ দেখায়নি। চলতি মৌসুমে কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামূলক সয়াবিন চাষ করে সফল হয়েছেন। বর্তমানে বাজারে গো খাদ্য হিসেবে এটির যথেষ্ট কদর রয়েছে। তবে তেল আহরণ করা গেলে চাহিদা কয়েক গুন বেড়ে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
২৬ মে সকালে উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের ডাইনজুরী বিলে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতে সয়াবিন পেকে গাছগুলো সবুজাভাব থেকে কিছুটা ধূসর ও লালচে রং ধারণ করেছে। এ সময় চাষীদের ক্ষেত থেকে ফলন সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
এ বিলের সয়াবিন চাষী মুহিবুল্লাহর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘সয়াবিন চাষ সম্পর্কে আগে ধারণা ছিলনা। এ বছর কৃষি অফিস থেকে বীজ, নিয়ে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী চাষ করে লাভবান হয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, `অন্য ফসলের সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, ‘সয়াবিন চাষে খরচ ও পরিশ্রম অনেকাংশে কম। আগামীতে আরো অধিক পরিমাণ জমিতে সয়াবিনের চাষ করার ইচ্ছা পোষণ করেণ কৃষক মুহিবুল্লাহ।’
জানা যায়, ডিসেম্বর- জানুয়ারী মাসে জমি প্রস্তুত করে তাতে সারিবদ্ধ অথবা সনাতন পদ্ধতিতে সয়াবিনের বীজ বুনতে হয়। দেড় -দুই মাসের মধ্যে বোনা বীজ পূর্ণাঙ্গ গাছে পরিণত হয়। পরে গাছে ফুল আসে, ফুল থেকে ফলন হয়। বীজ বোনার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সয়াবিন পাকতে শুরু করে। ফলনসহ গাছ গুলো তুলে নিয়ে বীজ আলাদা করা হয়। এরপর রোদে শুকিয়ে তা সংরক্ষন করা যায়।
সব মিলিয়ে ১ বিঘা জমিতে সয়াবিনের চাষ করতে খরচ পড়ে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বিপরীতে বিক্রি হয় আটাশ-ত্রিশ হাজার টাকা মতো। পাশাপাশি সয়াবিন গাছ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে উৎপাদিত সয়াবিন থেকে তেল আহরণের উপর বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘চাহিদা ও বাজার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এনে সয়াবিন চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন কৃষককে দিয়ে এবার ফটিকছড়িতে পরীক্ষামূলক সয়াবিন চাষ করানো হয়েছে। যথেষ্ট ফলন এসেছে, উপযুক্ত দাম পেয়ে চাষীরা খুশী।’
তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি আগামী বছর থেকে সয়াবিনের চাষ ও চাষীর সংখ্যা দুটাই বাড়বে।’
এসএ/