নিষিদ্ধ হয়েও বাড়ছে ইউক্যালিপটাস গাছ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নিষিদ্ধ হয়েও বাড়ছে ইউক্যালিপটাস গাছ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানোর পরিমাণ বাড়ছে। এতে কৃষিজমির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ক্রমেই ইউক্যালিপটাস আবাদি জমি, বসত বাড়ি এবং সড়কগুলোতে বেড়ে উঠছে। দ্রুত বেড়ে ওঠার কারণে উপজেলার সাধারণ মানুষ লোভে পড়ে এই গাছ লাগাচ্ছেন। মানুষ ও পরিবেশের কথা চিন্তা করে সরকার ২০০৮ সালে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করে।

দেখা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে কৃষকরা বাড়তি আয়ের আশায় আবাদি জমি, বসতবাড়ি এবং পতিত জমিতে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগাচ্ছেন। এই গাছ লাগিয়ে স্বল্প সময়ে কাঠ ও জ্বালানির কাঠের অভাব দূর হলেও দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়ছে পরিবেশ। ইউক্যালিপটাস গাছ অতিমাত্রায় পানি শোষণ করে।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক সিদ্দিক মিয়া বলেন, “ইউক্লিপটাস গাছ লাগালে ক্ষতি হয় জানা ছিল না। এই গাছ তাড়াতাড়ি বড় হয় সেজন্য লাগিয়েছি। এখন বিপদে পড়তে হচ্ছে। জমির আবাদ কমে গেছে। এর পাতা যেখানে পড়ে সেখানকার মাটি কালো হয়ে যায়। এরপর আর এই গাছ লাগাব না।”

শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুলক শিমুলবাড়ী গ্রামের রৌশন আলী জানান, “বনবিভাগ সড়কের দুই পাশে এত গাছ থাকতে তারা ইউক্যালিপটাস গাছ লাগিয়েছে। এই গাছ লাগানোর পর থেকে জমির ফসল কমে গেছে। সব সময় ধান খেতে পাতা পড়ে। সারের পরিমাণ বেশি দিলেও এই গাছের কারণে ফলন কমে যাচ্ছে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জনবাণীকে জানান, ‍“ইউক্যালিপটাস গাছ ফসলি জমির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সড়ক ও জমির আইলে ইউক্যালিপটাস গাছের কারণে কৃষকদের ফসলের উত্পাদন অনেকাংশে কমে যাচ্ছে। তাই এই গাছ কৃষিজমিতে লাগাতে আইন করে বন্ধ করা অতি জরুরি। এই গাছের কারণে মাটির পুষ্টি-প্রবাহও নষ্ট হয়। আর ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা পড়ে ছয় ইঞ্চি পর্যন্ত মাটির স্তর বিষাক্ত করে ফেলে। এতে ঐ স্থানে ঘাস ও লতাপাতা জন্মাতে পারে না। ইউক্যালিপটাস গাছ বিভিন্ন পোকামাকড় ও পাখিদের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। এই গাছ অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসারণ করে বলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।”

উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. নবির উদ্দিন জনবাণীকে বলেন, “ইউক্যালিপটাস গাছের উত্পাদন কিংবা বিপণনে আমরা নিরুৎসাহিত করছি মানুষকে। ইউক্যালিপটাস গাছের উৎপাদন আমাদের নার্সারিগুলোতে করা হয় না। এ উপজেলার অধিকাংশ সড়কে ইউক্যালিপটাস লাগানো হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে এই বন কর্মকর্তা জানান, এগুলো অনেক আগেই লাগানো হয়েছে। এখন নতুন করে আমরা এই গাছ লাগানো বন্ধ করেছি। মানুষকে এ গাছ না লাগানোর জন্য আমরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি।”

এসএ/