জনদূর্ভোগ কমাতে স্থানীয়দের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


জনদূর্ভোগ কমাতে স্থানীয়দের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ

দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে ১৩০ ফিট লম্বা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ কাজ চলছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা গত ৮ থেকে ১০ দিন ধরে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করছেন। সরকারিভাবে ব্রীজ নির্মাণের ব্যবস্থা না করায় চরম দুর্ভোগের শিকার ঐ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। তাই জনদুর্ভোগ কমাতে প্রতি বছর ঐ এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের নিজস্ব উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে কোন রকমেই চলছে পারাপার। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পারাপরে চরম দুর্ভোগের শিকার হন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ পারাপারে ব্যবহার করেন ডিঙি নৌকা। আবার কেউ কেউ পারাপার হন কলাগাছের ভেলায়। এতে করে প্রায়ই দুঘর্টনা ঘটে। যেন দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকায় করিমের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর উপর নির্মিত ১৩০ ফিট লম্বা বাঁশের সাকোটি জরাজীর্ণ অবস্থার মাঝেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারও মানুষ। ভারী বস্তা বা পণ্য সামগ্রী পারাপার করতে হিমসীম খাচ্ছে স্থানীয়রা। বিশেষ করে মহিলাসহ স্কুল-কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীরা সতর্কভাবে পারাপার করলেও অনেক সময় দূঘটনার শিকার হন। বারোমাসিয়া নদীতে সারা বছর পানি থাকে। বছরের পর বছর স্থানীয়রা ব্রীজের দাবী করে আসলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পারাপারে নির্মাণ করা হয়নি ব্রীজ। স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধার্থে জরাজীর্ণ সাঁকোটির পাশ দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদুল হকের নিজস্ব উদ্যোগে গত ৮ থেকে ১০ দিন ধরে নতুন করে বাঁশের সাঁকো নির্মানের কাজ শুরু করায় দুর্ভোগের শিকার হাজার হাজার মানুষের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে। 
 
স্থানীয় করুনা কান্ত ও রাজু মিয়া জানান, “সরকারিভাবে ব্রীজ নির্মাণ না হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী যুগের পর যুগ চরম দুর্ভোগ সহ্য করে আসছি। আমরা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে সাকোটি পার হই। ভাঙ্গাচুরা জায়গুলো পার হতে গিয়ে মনে হয় এই বুঝি সাকোটি ভেঙ্গে যায়। আমাদের এমন দুদর্শা দেখে ইউপি সদস্য রাশেদুল হক তার নিজ উদ্যোগে নতুন করে সাাঁকো নিির্মাণ কাজ শুরু করেছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই সাকো নির্মানের কাজ শেষ হবে বলে আশাকরছি।”

কৃষক সন্জু মিয়া ও হাসেম আলী জানান, “৭ বছর আগে এখানে একটা ঘাট ছিল। তখন আমরা নৌকা দিয়ে পারাপার করছি। তারপরে জনগণের কাছে বাঁশ কালেকশন করি আমরা একটা বাঁশের সাকো দিছি। এবার সাকোটি ভেঙ্গে গেছে। এখন পারাপারে খুবই সমস্যা।”

মৎস ব্যবসায়ী আতাউর রহমান রতন ও হামিদুল ইসলাম হিমু জানান, “সাকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ ফুট। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ পারাপার করে। প্রতিবছর আমরা নিজেদের উদ্যোগ সাকোটি পারাপারের উপযোগী করি। স্বাধীনতার ৫০ বছরও সরকারিভাবে ব্রীজ নির্মানের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদুল হক জানান, “ব্রীজ নির্মাণ না করায় বছরের পর বছর হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার। নিজ উদ্যোগে টানা ৭ বছর ধরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় প্রতি বছর সাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হতে হয়। এই নদীত একটি ব্রীজ নির্মান করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি জরুলি ভাবে একটি ব্রীজ নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সৃ-দৃষ্টি কামনা করেন।”

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, “সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এসএ/