অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে কুড়িগ্রামের ৪০ গ্রাম প্লাবিত


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে কুড়িগ্রামের ৪০ গ্রাম প্লাবিত

টানা বর্ষণ ও ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে কুড়িগ্রামের সীমান্ত ঘেষা রৌমারী উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের কমবেশি ৪০টি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে নিদারুণ কষ্টের  রয়েছে।  

অন্যদিকে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ক্রমেই বাড়ছে। তবে এখনও এসব নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানি নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত লাগোয়া রৌমারী উপজেলার, রৌমারী সদর, শৌলমারী, দাঁতভাঙ্গা ও যাদুর চর ইউনিয়নের বেশীর ভাগ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 
অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, মেঠো পথ তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যতঃ ভেঙে পড়েছে। ফলে এসব ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির মুখে রয়েছে। এসব এলাকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এখন নৌকা। 

আকস্মিক পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় জমির বাদাম, পাট, সবজিসহ চর এলাকার বিভিন্ন প্রকার ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।

রৌমারী উপজেলার শৌলমারী এলাকার কৃষক আবুল হোসেন জনবাণীকে বলেন, “পানি বৃদ্ধির ফলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামের  মানুষজন। নৌকা করে যাতায়াত করছে এসব এলাকার মানুষ। বাদাম, পাট ও সবজিসহ ভিভিন্ন প্রকার ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষককুল। ”

রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্যা জনবাণীকে জানান, “উপজেলার ৩৫ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।”
 
শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, উপজেলার ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় এগুলোতে সাময়িক  শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জনবাণীকে জানান, “রৌমারী উপজেলার ২১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।”

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল জনবাণীকে জানান, “বৃষ্টির সাথে নেমে আসা উজানের পানিতে রৌমারী উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে কি পরিমান মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যা নিরূপণে প্রশাসন কাজ করছে।” 

এসব এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সাহায্য পৌঁছায়নি বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্যা আল মামুন জনবাণীকে জানান, “কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০৬ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢলে ও বৃষ্টিতে রৌমারী উপজেলার বেশকিছু গ্রামে পানি ঢুকে পড়লেও আপাতত বড় ধরনের কোন বন্যার সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী ২০ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে একটি বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে।”

এসএ/