সড়কগুলো যেন এলাকাবাসীর দূর্ভোগ!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সড়কগুলো যেন এলাকাবাসীর দূর্ভোগ!

গাজীপুরের শ্রীপুরে কয়েকটি বেহাল সড়কে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বেশ কয়েক বছর ধরে সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা তৈরী হলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতিতে সড়কগুলো সংস্কার হয়নি। বছরের অন্যান্য সময় ধরে দুর্ভোগ নিয়ে লোকজন ও শিল্পকারখানার শ্রমিকরা চলাচল করলেও প্রতিবছর বর্ষায় কয়েকগুণ বাড়ে তা। সাধারণ মানুষের সাথে এখন দুর্ভোগে পড়েছে একটি বিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী। 

স্থানীয়দের ভাষ্য, শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের এমসিবাজার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক হতে হাজী ছোট কলিম স্কুল সড়কটি সংযুক্ত হয়েছে মাওনা-ধনুয়া সড়কে। এ সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। এর পাশেই রয়েছেসুফিয়া কটন মিলের পাশ্ববর্তী রিয়াজ উদ্দিন মেম্বার সড়ক। এই সড়কটিও প্রায় ৮০০মিটার। এছাড়াও রঙিলা বাজার থেকে পিয়ার আলী কলেজ রোড রয়েছে যার দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটার। এ তিনটি সড়ক ব্যবহার করে আশপাশের ১৪টি শিল্পকারখানার লাখো শ্রমিক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সহ হাজারো মানুষ। সড়কগুলো সংস্কারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেননি কেউ। 

হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল জনবাণীকে বলেন, ‍“তাদের বিদ্যালয়ে প্রবেশের মূল সড়ক এমসি বাজার হতে এই সংযোগ সড়কটি। এই বিদ্যালয়ে ২২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। সাথে রয়েছে কলেজ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আগামী ১৯ জুন থেকে এসএসসি পরীক্ষা, এটি পরীক্ষা কেন্দ্রও। এখানে ৯টি বিদ্যালয়ের ১৮২৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিতে আসবে। এ সড়ক দিয়ে শিল্পকারখানার ভারী যানবাহন চলাচল করে। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে এ সড়কটি। শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। কাদাপানি মাড়িয়ে তাদের বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। এ মুহূর্তে সামান্য সংস্কার করে দিলেও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কিছুটা কমতো। এই সড়কের পাশেই সুফিয়া কটন মিলস সংলগ্ন হাজী রিয়াজউদ্দিন মেম্বার সড়ক। বিকল্প হিসেবে এ সড়কটিও ব্যবহার হতো। এটিও বর্তমানে বেহাল।” 

স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ মিয়া জনবাণীকে বলেন, “কয়েক বছর ধরে শুধু আবেদন করেই গেলাম সংস্কারের জন্য। এক জন আরেক জনকে দেখায়। বর্তমানের মাত্র ৫০০ মিটার সড়কের জন্য এ সড়কে চলাচল করতে পারছে না সাধারণ লোকজন।”

স্থানীয়রা জানান, এ সড়কগুলো কেন্দ্র করে মাওনা ও মুলাইদ এলাকায় প্রায় ১৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যেখানে কাজ করছে লক্ষাধিক শ্রমিক। সড়কগুলো বেহাল হয়ে থাকায় পণ্য পরিবহন ও শ্রমিকদের চলাচলেও দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। 

নোমান গ্রুপের নাইস ফ্রেব্রিকস কারখানার শ্রমিক আমেনা আক্তার বলেন, “বৃষ্টি হলে হাতে জুতো নিয়ে রাস্তায় চলতে হয়। সারা দেশে এতো উন্নয়ন হচ্ছে। আর এখানকার রাস্তার দিকে তাকালে কত মলিন লাগে। শিল্প এলাকায় কেন এতো অবহেলা বিষয়টি তার ভাবনায় আসে না।” 

তামিশনা ফ্যাশন কারখানার শ্রমিক মতিউর রহমান বলেন, “ছোট ছোট দুর্ভোগগুলোআজ বড় সমস্যা হিসেবে দাড়িয়েছে। গত আট বছর এই এলাকায় চাকুরী করে দেখেছেনএই এলাকার প্রতি সবার যেন কেন অবহেলা। জনগনের দুর্ভোগের কথা ভেবে অন্তত এখন সরকারের লোকজনের নজর দেয়া প্রয়োজন।” 

মুলাইদ এলাকার আব্দুল আজিজ বলেন, “রঙিলা বাজার হতে পিয়ার আলী কলেজ সড়কটিও বেহাল। তিনি সড়কটির সংস্কারের জন্য তিন বছর ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছেন। কোন ফল হয়নি। সাধারন মানুষের কোন দুর্ভোগের বিষয়ে কেউ ভাবেনা এগুলো খুবই হতাশার।”

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী রাজিবুল আহসান জনবাণীকে বলেন, “আপাতত সড়কগুলোর জরুরী  সংস্কারের জন্য আমাদের কোন তহবিল নেই।তবে স্থায়ী সংস্কারের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয় যা বেশ কিছু সময়ের প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে এই মুহূর্তে আমাদের কিছুই করার নেই।তবে আগামী অর্থবছরে সড়কগুলো সংস্কার যেন হয় সে চেষ্টা করবো।”

এসএ/