রাবেয়ার ঘরে হাজার দেড়েক জিন বন্দি!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


রাবেয়ার ঘরে হাজার দেড়েক জিন বন্দি!

গানের তালে তালে জিন ছাড়াচ্ছেন কবিরাজ রাবেয়া বেগম। জিনের সংখ্যা ১০ টায় দাড়ালে একে একে বন্দি করবেন বোতলে। এ ভাবেই হাজার দেড়েক জিন বন্দি আছে তার ঘরে।

নাটোর জেলা জুড়ে এ ধরনের ঘটনা যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলার সবগুলো উপজেলাতে বেড়েছে জিন-ভুত, রোজা-কবিরাজের দৌরাত্ম্য। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের কথা ভুলে কিছু হলেই কবিরাজের দ্বারস্থ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মানুষের ভয় আর আতঙ্ক বাড়িয়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত করছে এ সব ওঝাঁ-কবিরাজরা।  কেউ কেউ শহরের হাটবাজারে বিক্রি করছেন নিষিদ্ধ ওষুধ। ডাক্তাররা বলছেন, এসব চিকিৎসায় রোগীর ওপর পড়তে পারে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব।

দিনেদুপুরে আগুন জ্বালিয়ে চলছে তন্ত্রসাধনা। হালকা সর্দি থেকে বন্ধ্যাত্ব সব দূর করতে পারে এই ধোঁয়া, এমনটাই দাবি বশির ওঝার। এমনকি কোনো কারণে ভয় পেলে শরীরে হাত ছুঁয়ে সেই ভয় নামিয়ে দিতে পারেন বড়াইগ্রামের তান্ত্রিক আজহার আলী।

শুধু গ্রাম নয়, শহরের হাটবাজারেও প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ ওষুধের বেচাকেনা। অনুমোদনহীন এসব ব্যবসার একমাত্র অজুহাত পারিবারিক সূত্রে পাওয়া অভিজ্ঞতা।

কিন্তু আধুনিক চিকিৎসার যুগেও কুসংস্কার আর অবৈধ ওষুধের ফাঁদে কেন পা দিচ্ছে মানুষ? নাটোরে ওঝা আর ঝাঁড়ফুঁকের দ্বারস্থ হওয়ারা বলছেন, দারিদ্র্যই এর প্রধান কারণ। একজন বললেন, ‘ডাক্তারের কাছে ম্যালা খরচ, আমরা গরিব মানুষ এত ট্যাকা পাব কই?’

এসব ওঝা-কবিরাজদের অপতৎপরতা ঠেকাতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। 

নাটোর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জনবাণীকে বলেন, ‍“তিনি সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলে অচিরেই এসব অপচিকিৎসা বন্ধ করার প্রয়াস নেবেন।”

আর জেলা সিভিল সার্জন রোজী আরা খাতুন জনবাণীকে বলেন, “এই দুষ্টচক্রকে দমন করতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। যে কোনও অসুস্থতায় ওঝার শরণাপন্ন না হয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টরা।”

এসএ/