স্বাধীনতাত্তোর শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে পদ্মা সেতু: শেখ পরশ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্বাধীনতাত্তোর শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে পদ্মা সেতু: শেখ পরশ

‍“বাঙালির ইতিহাসে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় হচ্ছে সবচেয়ে বড় অর্জন, আমাদের গর্বের প্রতীক। এর মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি গণতন্ত্র, সংবিধান, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা, আমাদের ভূখ- এবং বাঙালি হিসাবে আমাদের পরিচয়। কিন্তু স্বাধীনতাত্তোর আমাদের যা যা অর্জন, যে সকল বিষয়ে বাঙালি হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি, যেমন পোশাক শিল্প, ক্রিকেট ইত্যাদির মধ্যে আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে পদ্মা সেতু।” 

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে ২৫ জুন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভা সফল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে দক্ষিণবঙ্গের ২২টি জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এসব কথা বলেন।  

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, “পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। এ আত্মবিশ্বাস অর্জন সম্ভব হয়েছে শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বের কারণে। তার নেতৃত্বের গুণে বাংলাদেশ আজ একটি শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়ে আছে যা সরকারকে সাহস যুগিয়েছিল নিজস্ব অর্থায়ণে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিতে। তবে এ কাজটি খুব সহজ ছিল না। এটি করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনেক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়েছে এবং পরিশেষে তিনি সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন।” 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। সঞ্চালনা করেন-যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, “ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে এই সেতু একটা মাইলফলক হিসাবে ভূমিকা রাখবে। গ্রামের মানুষকে জীবিকা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার জন্য শহরে দৌঁড়াতে হবে না। নিজ জেলা থেকেই শহরের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবে। উন্নতমানের বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, শিল্প, কল-কারখানা ও কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে। খুব শীঘ্রই, স্বাভাবিকভাবে আপনার জেলার পৌরসভা মেগা শহরে রূপান্তরিত হবে। এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নদীবেষ্টিত ভূখণ্ড সরাসরি রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু যেমন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ৫ কোটি মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক সুবাতাস বয়ে আনবে, তেমনই কমপক্ষে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ জাতীয় আয় বৃদ্ধিও নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে, লাভবান হবে পুরো দেশের মানুষ। প্রসার হবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মাণে এই সেতুর প্রভাব হবে অপরিসীম। মোটকথা, যোগাযোগের ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পদ্মা সেতু উন্মুক্ত হওয়ার সাথে সাথে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগ অত্যন্ত সহজতর হবে। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পদ্মা সেতু আজকে বাংলাদেশের একটি বাস্তবতা। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্যই গর্বের বিষয় নয়, এটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের জন্য একটি শিক্ষণীয় উন্নয়ন প্রকল্প হয়ে থাকবে।”

তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “২০২৩ এর নির্বাচনকে সামনে রেখে আপনাদের ভূমিকা হবে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া। এর গুরত্ব আপনারা সভা-সমাবেশে বলবেন। এভাবে পদ্মা সেতুর গুরত্ব সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তিনি ২৫ জুনের জনসভাকে সফল করার লক্ষ্যে যুবলীগের স্বেচ্ছাসেবক টিম, ফ্রি মেডিকেল টিম, শৃঙ্খলা টিম, সার্বিক মনিটরিং টিম, প্রচার টিম, আপ্যায়ন টিম গঠন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যেন কোন অপশক্তি নস্যাৎ করতে না পারে সে দিকে যুবলীগের নেতা-কর্মীদেরকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম এমপি বলেন, “আগামী ২৫ জুন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত জনসভা সফল করার জন্য যুবলীগকেই প্রধান দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি সফল করার জন্য আমাদের ধারণার চেয়েও যুবলীগ বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি যুবলীগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

এসএ/