রাণীনগরে চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেনি অর্ধেক মিলাররা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


রাণীনগরে চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেনি অর্ধেক মিলাররা

গত তিন মৌসুম ধরে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সরকারী ভাবে অভ্যন্তরীন ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে লক্ষ মাত্রা অর্জিত হচ্ছেনা। খোলা বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় লোকসান এড়াতে চলতি মৌসুমেও চাল সরবরাহে অর্ধেক মিলাররা চুক্তিতে আসেনি। ফলে এমৌসুমেও লক্ষমাত্রা অর্জণ নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন,চুক্তি অনুযায়ী খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় গত তিন মৌসুমে ১৩ জন মিলারকে জামানত বাজেয়াপ্ত ও লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। এমৌসুমে যে সকল মিলাররা চুক্তিতে আসেনি এবং চুক্তিবদ্ধ মিলাররা চাল সরবরাহ না করলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রাণীনগর উপজেলা খাদ্যগুদাম কার্যালয় সুত্রে জানাযায়,চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীনভাবে ৪০টাকা কেজি দরে ২হাজার ৮৫৫মেট্রিকটন চাল এবং ২৭টাকা কেজি দরে ২হাজার ৫৮০মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ধান-চাল ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়। ওই দিনই মাত্র পৌনে দুই মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ হলেও এখন পর্যন্ত আর কোন ধান সংগ্রহ হয়নি। এছাড়া উদ্বোধনের দিন থেকে সোমবার পর্যন্ত ২৭৩ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সুত্র অনুযায়ী উপজেলায় নিবন্ধনকৃত মিল ১২৫টি  ছিল। এর মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করায় গত তিন মৌসুমে ১৩জন মিলারকে জামানত বাজেয়াপ্ত ও লাইসেন্স বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন এবং মিল বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমান মোট ১০০জন মিলার রয়েছেন বৈধ লাইসেন্স ধারী। এর মধ্যে চাল সরবরাহে মাত্র ৫১জন মিলার চুক্তিতে আসলেও আরো ৪৯জন মিলার চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেনি। 

তথ্য মতে,২০২১সালে আমন মৌসুমে ১হাজার ৮৫৬মেট্রিকটন চালের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছিল মাত্র ১১১.০৬০মেট্রিকটন এবং ৯১৬মেট্রিকটন ধানের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছিল মাত্র ১মেট্রিকটন। ওই বছরে বোরো মৌসুমে ২হাজার ৮৩৭ মেট্রিকটন চালের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছিল ২হাজার ৭৭২.৪৬০মেট্রিকটন এবং ১হাজার ৮৬১মেট্রিকটন ধানের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছিল মাত্র ৭৯১.৫২০মেট্রিকটন। গত আমন মৌসুমে চালের লক্ষমাত্রা অর্জিত হলেও ৯৬৯মেট্রিকটন ধানের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৪মেট্রিকটন। 

রাণীনগর উপজেলা ধান-চালকল মিল মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোছাদ্দেক খাঁন বাবলু বলেন,চলতি মৌসুমে সরকার নির্ধারিত দরের চাইতে খোলা বাজারে প্রতি কেজি চাল ৩ থেকে ৪টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর পরেও সরকারকে সহযোগিতা করতে এবং লাইন্সেস টিকে রাখতে লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান গুনে খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করতে হচ্ছে। 

খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন বলেন,সরকার নির্ধারিত দরের চাইতে খোলা বাজারে কৃষকরা প্রতি মন ধানের দাম ২৫০টাক থেকে ৩০০টাকা বেশি পাওয়ায় সরকারী খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছেনা।এছাড়া চলতি মৌসুমে অর্ধেক মিলাররা চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেনি। ফলে লক্ষমাত্রা অর্জনে অনেকটায় শংকা রয়েছে। তবে চুক্তিবদ্ধ মিলাররা যেন চাল সরবরাহ করেন সে ব্যাপারে মিলারদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

 উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন,যে সকল মিলাররা চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেনি এবং সক্ষমতা থাকা সর্তেও সরকারকে সহযোগিতা করছেনা তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জি আই/