জীবননগর খাদ্য গুদামে ভাল চাউলের সাথে নিন্মমানের চাউল ভেজালের অভিযোগ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


জীবননগর খাদ্য গুদামে ভাল চাউলের সাথে নিন্মমানের চাউল ভেজালের অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যোগসাজসে খাদ্য গুদামে নিন্মমানের চাউল ক্রয় ও তা পরবর্তীতে সময়ে ভাল চাউলের সাথে ভেজাল করে ভোক্তাদের মাঝে সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সোমবার সকালে একই ভাবে ভাল চাউল নিন্মমানের চাউল ভেজাল কালে সাংবাদিকদের নিকট বিষয়টি ধরা পড়ে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়,জীবননগর উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেনও অফিস সহকারী রাকিব হোসেন যোগদানের পর থেকে নানা কৌশলে নাইটগার্ড মাসুদ আলম এবং ফুড গোডাউন শ্রমিক সর্দার রমজান আলীর মাধ্যমে দুর্ণীতি-অনিয়ম করে আসছিলেন। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেন ও অফিস সহকারী রাকিব হোসেন দুর্ণীতির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত মিলারদের নিকট থেকে নিন্মমানের চাউল ক্রয় করে তা ভোক্তাদের মাঝে সরবরাহ করে থাকে। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মিলারদের অভিযোগ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে প্রতি কেজি ভাল চাউলের অনুকুলে এক টাকা এবং নিন্মমানের খাওয়ার অনুপযোগী চাউলের অনুকুলে ৬-৭ টাকা হারে উৎকোচ না দিলে তিনি চাউল নিতে চান না। এসব নিন্মমানের চাউল খাদ্য গুদাম থেকে সরকারী বিভিন্ন কর্মসুচিতে সরবরাহ করা হয়।

অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়,নিন্মমানের চাউল ক্রয়ের পর তা অফিস টাইমের আগে ভোর থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত গুদাম শ্রমিক সর্দার রমজানের নেতৃত্বে খাদ্য গুদাম ভিতর থেকে তালাবদ্ধ করে ভিতরে সমস্ত শ্রমিকেরা নিন্মমানের(স্থানীয় ভাষায় তামড়ী চাউল অর্থাৎ লাল রংয়ের চাউল) চাউলের সাথে ভাল চাউল ভেজাল করে থাকে। এ ভাবে দীর্ঘ এক বছর ধরে নিন্মমানের চাউল ক্রয় করে তা ভাল চাউলের সাথে ভেজাল করে আসছেন। একই ভাবে সোমবার সকালে নিন্মমানের চাউলের সাথে ভাল চাউল ভেজাল কালে বিষয়টি সাংবাদিকদের চোখে পড়ে। সাংবাদিকদেরকে খাদ্য গুদাম কর্মকতা কাওসার হোসেন বলেন,ভিজিএফ’র চাউল তৈরী করা হচ্ছে।

 উপজেলা খাদ্য গুদামের তালিকাভুক্ত কোন মিলার প্রতিবাদ করলে সেই মিলারের চাউল ক্রয় করতে গিয়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার,অফিস সহকারী রাকিব,নাইট গার্ড মাসুদ রানা ও শ্রমিক সর্দার রমজান নানা ভাবে হয়রানি করে থাকে। অন্যদিকে খাদ্য গুদাম কাওসার হোসেন নিয়মিত অফিস না করে অধিকাংশ সময় বাইরে অবস্থান করেন এবং নাইট গার্ড মাসুদ রানা স্থানীয় হওয়ায় মিলারদের নিকট থেকে উৎকোচের টাকা আদায় করে থাকে। মাসুদ রানা নাইট গার্ড হলেও অফিসার হালে তাকে দিনের বেলায় খাদ্য গুদামে দেখা যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ মাসুদ রানা বর্তমানে কোটি টাকার বেশী সম্পদের মালিক।

স্থানীয়জন প্রতিনিধিদের অভিযোগ বিভিন্ন প্রাকৃতি দুর্যোগকালীন সময়ে,ঈদের বিশেষ ভিজিএফ,ভিজিডি,ওএমএস,টিআর,জিআর বিভিন্ন কর্মসুচিতে অসহায়,হতদরিদ্র কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সরকারী ভাবে উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে যে চাউল সরবরাহ করা হয় তা অত্যন্ত নিন্মমানের ও অনেক ক্ষেত্রে খাওয়ার অনুপযোগী এবং ওজনে কম দেয়া হয়ে থাকে। এসব ব্যাপারে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে অভিযোগ করেও কোন কাজ হয় না।

উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কাওসার হোসেন বলেন,ভাল চাউলের সাথে নিন্মমানের চাউল ভেজাল করার অভিযোগ সত্য নয়। ভিজিডির চাউল সরবরাহের জন্য চাউল গড় করে রিপ্যাক করা হচ্ছিল।

তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়,ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে। আর এই সুযোগে ভেজাল কাজে ব্যস্ত শ্রমিকেরা দ্রæত গোডাউনে ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওবাইদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় ঘটনার ব্যাপারে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শহিদুল হক বলেন,নিন্মমানের চাউল ক্রয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভিজিডির চাউল সরবরাহের জন্য যদি ৩০ কেজির প্যাকেট না থাকে,তাহলে রিপ্যাক করা যাবে। শ্রমিকেরা যদি সঠিক ন্যায় কাজ করেন তাহলে তারা গুদাম ছেড়ে পালাবে কেন? আমি বিষয়টি দেখছি।

জি আই/