একা পেয়ে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী, কলেজ শিক্ষককে শোকজ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
পাইকগাছা প্রতিনিধি: মীমাংশার নামে শ্লীলতাহানীর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টায় মানসিকভাবে বিপর্ষস্ত ছাত্রী সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ ও সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কপিলমুনি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক সৌমিত্র সাধুর বিরুদ্ধে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ করেছে কলেজের এইচ এস সি পরীক্ষার্থী মেধাবী এক এতিম ছাত্রী।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, ডাকযোগে অভিযোগপত্রটি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সৌমিত্র সাধুকে শো-কজ কারণ দর্শাও নোটীশ প্রদান করা হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারী পাঠানো ঐ নোটীশে তাকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগের ব্যাপারে তার বক্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানাতে বলা হয়েছে।অভিযোগে জানানো হয়, কপিলমুনি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ও উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের সুনীল সাধুর ছেলে সৌমিত্র সাধু কপিলমুনি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি স্থানীয় মটর সাইকেল স্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘ দিন যাবৎ একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন।
ছাত্রীর অভিযোগ, সে তার কাছে গত প্রায় ৪ বছর ধরে কোচিং করছে। গত মাস ছ’য়েক আগে তার পিতার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সে কপিলমুনি কলেজে পড়ালেখা ও কোচিং সুবিধার্থে পার্শ্ববর্তী তার এক মাসীর বাড়িতে থেকে পড়া-লেখা করে। সম্প্রতি তার শিক্ষক সৌমিত্র সাধুর তার উপর কু-নজর পড়ে। একপর্যায়ে সকলের অনুপস্থিতে তার শ্লীলতাহানী ঘটায়। এঘটনায় সে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে।
এব্যাপারে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ঘটনার পর প্রথমে সে বিষয়টি কলেজের উপাধ্যক্ষ ত্রিদিব কান্তি মন্ডলকে জানায়। এরপর তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকসহ কলেজের আরো এক শিক্ষক পরিমল সাধুকে সাথে নিয়ে তার মাসীর বাড়ীতে যান বিষয়টি মিমাংসার জন্য। ঘটনায় সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাসহ ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবেনা এমনকি উপাধ্যক্ষ এঘটনায় তার যথোপযুক্ত শাস্তির আশ্বাস দিয়ে অভিযুক্তকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে এমনকি ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করেন। মূলত এরপরই ঘটনার শিকার ছাত্রী সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি দাখিল করেছে।
এব্যাপারে কলেজের উপাধ্যক্ষ ত্রিদিব কান্তি মন্ডল মিমাংসার চেষ্টার বিষয়টি সাংবাদিকদের সাথে স্বীকার করেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুল্ল্যাহ বাহার অভিযোগপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে জনবাণীকে জানান, তার কাছে ডাকযোগে একটি অভিযোগপত্র এসেছে। এরপর গত ১৫ জানুয়ারী অভিযুক্ত শিক্ষক সৌমিত্র সাধুকে তার স্বপক্ষে কারণ দর্শাতে ৭দিনের সময় দিয়ে একটি শো-কজ প্রদান করা হয়েছে। এর জবাব পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এব্যাপারে কপিলমুনি কলেজের সভাপতি পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগমের সাংবাদিকদের জানান, অনুরুপ একটি অভিযোপত্র তাকেও পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে কলেজ অধ্যক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শো-কজ করেছেন। এদিকে ঘটনার কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসে গুঞ্জন চলছে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এসএ/