পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়ি সহ হুমকিতে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়ি সহ হুমকিতে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজায় পদ্মা নদীর  তীব্র ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে গত ২০দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বিপুল পরিমান ফসলী জমি, হুমকীর মুখে পড়েছে নদী রক্ষা বাঁধ, বসতঘর ও  কুষ্টিয়া ঈশ্বরদী মহাসড়ক।

গত ২০ দিন ধরেই প্রমত্ত পদ্মার ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল মসলেমপুর টিকটিকিপাড়ার প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানির তোড়ে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ৫ শত বিঘা ফসলি জমি। নদী থেকে মাত্র দেড়শ মিটার দুরে রক্ষা বাঁধও পড়েছে হুমকীর মুখে। 

হুমকীতে নদী থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কও। নতুন করে ভাঙন আতঙ্কে নদী তীরবর্তি এলাকার মানুষের কাটছে নির্ঘূম রাত। এরই মধ্যে গত ২৬ শে জুন ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে মানববন্ধন ও সমাবেশও করেছে স্থানীয়রা। দিয়েছেন আল্টিমেটাম। 

অপরদিকে  মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া ও তালবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় পদ্মা নদী ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকশ একর ফসলি জমি। প্রতিদিনই ৬০ থেকে ৭০মিটার নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বিলীন হয়েছে অনেকের বসতবাড়ি ও জমি। হুমকিতে রয়েছে আরও শত শত বিঘা ফসলি জমি, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কসহ হাজারও বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা। 

এদিকে একমাত্র আয়ের উৎস ফসলি জমি হারিয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা এখানকার হাজারও কৃষক। কোন আশ্বাস নয়, নদী ভাঙন ঠেকাতে অবিলম্বে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।

ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাম বাসীর দাবি দ্রুত ভাঙন রোধ না করা গেলে তাদের কয়েক হাজার একর আবাদি ফসলি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। হুমকির মুখে তাদের অসংখ্য স্থাপনা তাই প্রশাসনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ভেড়ামারা বাহিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রওশন আরা জনবাণী কে বলেন,গত বছর নদী ভাঙ্গনের সময় থেকেই আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতৃপক্ষের নিকট জানিয়েছিলাম। তারা ব্যবস্থাগ্রহনের কথা জানিয়েও কোন পদক্ষেপ নেন নি। এইবারও আমরা তাদের জানিয়েছি তারা আশ্বাস জানিয়েছে কিন্তু এখনো কোন কাজ করেনি। এই নদী ভাঙ্গনের ফলে সাধারন জনগন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মিরপুর তালবাড়ীয়া এলাকার শান্ত বিশ্বাস জনবাণী কে জানান, তালবাড়িয়া ইউনিয়নের রানাখড়িয়া গ্রামে ভয়াবহ পদ্মা নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সাগর মুন্সির বাধ নামক স্থান এবং বারুইপাড়া ইউনিয়নের শিমুলতলা নামক স্থান ও তালবাড়িয়া ইউনিয়নের সব থেকে বেশি জায়গা ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে শত শত বাড়ি ঘরসহ ফসলী মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। 

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জনবাণী কে বলেন, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হামিদের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনবাণী কে বলেন, মিরপুর উপজেলায় নদী ভাঙ্গন রক্ষার জন্য কাজ চলছে এবং ভেড়ামারা বাহিরচরের ভাঙ্গন রক্ষার কাজের জন্য ডিজির কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত আসেনাই।

জি আই/