বিএনপি নেতার নির্দেশেই যশোরের যুবদল নেতা খুন
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
যশোর যুবদলের সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনিকে নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়ার নির্দেশেই খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ
পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনের আগে মামলার পাঁচ নম্বর আসামি আল আমিনকে গ্রেফতারের তথ্য জানা গিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে তাকে সহ আরও দুইজনকে গ্রেফতারের কথা বলা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- শহরের রেলরোড এলাকার ফরিদ মুন্সির ছেলে ২৫ বছরের রায়হান ও শংকরপুর এলাকার বাবু মীরের ছেলে ২০ বছরের ইছা মীর।
এসময় হত্যায় ব্যবহৃত গাছি দা, চাইনিজ কুড়াল ও বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, “মূলত বিএনপির রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।”
আসামিদের বরাত পুলিশ সুপার বলেন, “স্থানীয় বিএনপি নেতা শামীম আহম্মেদ মানুয়া ও বদিউজ্জামান ধনির মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে মানুয়ার মেয়ের জামাই ইয়াসিন হত্যা মামলায় ধনিকে আসামি করা হয়। সর্বোপরি এলাকায় দলীয় কোন্দল আর রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ধনিকে হত্যা করা হয়। মানুয়ার নির্দেশে তার ভাগ্নে রায়হান হত্যা করে।”
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে যশোরের নাজির শংকরপুরে আকবরের মোড় এলাকায় ধনিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে পৌর বিএনপির নেতাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মণি। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৫/৬ জনকেও আসামি করা হয়েছে।
ধনিকে হত্যার পর মানুয়ার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে স্বজনদের অভিযোগ, ‘পূর্ববিরোধের কারণে ধনিকে লোক দিয়ে খুন করিয়েছেন শামীম আহমেদ মানুয়া নামে সেই বিএনপি নেতা। তিনি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলে জনবাণীকে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক। তার সঙ্গে ধনির বিরোধের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি।’
ধনির শ্যালক তপু রহমান বলেন, “এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শামীম আহমেদ মানুয়া ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাকে ধরতে পারলেই এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হবে।”
প্রত্যক্ষদর্শী ক্লিনার আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় স-মিল শ্রমিক শাহজাহান শেখ ও রাজমিস্ত্রি শ্রমিক ফয়সাল হোসেন জানান, “মঙ্গলবার ১১টার একটু পর বাসার সামনে শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ে ইউসুফের চা দোকান থেকে চা পান করেন ধনি। পরে স্থানীয় শান্তি কমিটির অফিসে বসেছিলেন তিনি। এসময় একটি রিকশায় করে এসে ধনিকে কুপিয়ে হত্যা করেন ২০ থেকে ২২ বছরের তিন যুবক। এতে চার থেকে পাঁচ মিনিট সময় নেন তারা। সেই তিনজনের মধ্যে একজন অফিসের ভেতর থেকে ধোনিকে তার জামার কলার ধরে বের করে নিয়ে আসেন। এরপর সড়কের মধ্যে তার ডান পায়ে রামদা দিয়ে কোপ দেন। ধনিকে টানতে টানতে তার সামনে বৌরানী ফার্মেসির সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি পড়ে যান। সেখানে দুই যুবক তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একজন ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এই হত্যায় তিন যুবক থাকলেও গেঞ্জি ও টি-শার্ট পরা একজন পাহারা দিচ্ছিলেন। এসময় এগিয়ে আসলেও তাকে বাঁচাতে পারিনি। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
এসএ/