আলুর বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ লালমনিরহাটের চাষীরা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


আলুর বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ লালমনিরহাটের চাষীরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:  লালমনিরহাটের কৃষকরা অনেক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে আলু চাষ করেছেন এবার। আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে এবার এ জেলায়। জমিতে আবাদ করা ফসল ঘরে তুলতেও শুরু করেছেন অনেক কৃষক। কিন্তু আলুর বর্তমান বাজারদরে লাভ তো দূরের কথা খরচও তুলতে পারছেন না তারা। ফলে হতাশা বিরাজ করছে তাদের মধ্যে।

জানা গেছে, প্রতি বছর নতুন আলু ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এবার শুরুতেই দাম ছিল অর্ধেক। এ বছর প্রতি কেজি নতুন আলু ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বর্তমানে আগাম আলুর দাম আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। এখন প্রতি কেজি আলু পাইকারি ৮-১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আলুর জাত ভেদে দামের পার্থক্য রয়েছে। 

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সাধারণত নভেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত আগাম আলু লাগানো হয়। এ বছর জেলায় ৬ হাজার ৪৩২ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১৭ দশমিক ২৮ মেট্রিক টন। আর গড়ে প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ সাড়ে সাত টাকা। এ পর্যন্ত মোট আবাদের ৪০ শতাংশ জমির আলু তোলা হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর গ্রামের কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, এ বছর দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু লাগিয়েছি। বীজ, সার, শ্রমিকের খরচ, সেচ বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে যা পাবো তা দিয়ে দিনমজুরদের খরচ তুলতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।

আদিতমারীর দোলজোর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, উচ্চ মূল্যে বীজ কিনে আলু চাষ করেছি। এখন বিক্রির সময় ভালো দাম পাচ্ছি না। দুই মাস আগে প্রতি কেজি আলু ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল। আর এখন জমি থেকে ৭ টাকা থেকে সাড়ে ৯ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

একই গ্রামের কৃষক সোলায়মান বলেন, আমি এ বছর দুই একর জমিতে আলুর আবাদ করেছি। ফলনও মোটামুটি ভালো হয়েছে। কিন্তু আলুর বাজার দর ভালো না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। সরকার যদি আলুচাষিদের দিকে না তাকায় তাহলে আমরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলব।

আদিতমারি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলিনুর রহমান বলেন, কৃষকরা এখন আগাম জাতের আলু তুলছে। এবার আগাম আলুর ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে দাম কম পাচ্ছেন কৃষক। খুচরা বাজারে আলুর যে দাম পাইকারি বাজারে তার থেকেও অনেক কম। কৃষি অধিদফতর মনে করছে, এই আগাম আলু যদি আরও ১০-১৫ দিন আগে তোলা হতো তাহলে কৃষকরা দাম মোটামুটি ভালো পেতেন।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ জনবাণীকে জানান, এখন পর্যন্ত আগাম আলুর মাত্র ৪০ শতাংশের মতো উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমান বাজার দরে কাঙ্ক্ষিত লাভ হচ্ছে না। তবে সামনের দিকে দাম কিছুটা বাড়লে চাষিদের লোকসানে পড়তে হবে না।

এসএ/