সুন্দরবনে বাঘের আনাগোনা বেড়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
বাগেরহাট প্রতিনিধি: পূর্ব সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে বনজীবিদের কাছ থেকে। বনে প্রবেশ করলেই যত্রতত্র শোনা যাচ্ছে বাঘের ডাক। দেখাও মিলছে প্রচুর বাঘের। গত প্রায় ১০ বছরেও বনে দেখা যায়নি বাঘের এমন উপস্থিতি।
পূর্ব বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সামসুল আরেফীন বাঘ বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করে জনবাণীকে জানান, চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাঘের আবাস্থলে নজরদারী বাড়ানোর ফলে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাঘ বৃদ্ধির ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যসহ স্থানীয়রা।
বনরক্ষীরা বন রক্ষায় সরকারী দায়িত্ব পালন করলেও রয়েল বেঙ্গল টাইগার প্রাকৃতিকভাবে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সার্বক্ষণিক সুন্দরবন রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। বাঘের ভয়ে মানুষ বনে প্রবেশ করতে সাহস না পাওয়ায় রক্ষা পাচ্ছে বন।
সেই অতন্দ্র প্রহরী বাঘের সংখ্যা ১৯৮২ সালের জরিপে ৪৫৩ টির পর হ্রাস পেয়ে ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে দাঁড়িয়েছে ১১৪টিতে। এর পরেও চোরা শিকারিদের খপ্পরে পড়ে, বার্ধক্যজনিত কারণে ও অসুস্থতায় কমছে সুন্দর বনের বাঘের সংখ্যা। ফলে হতাশা দেখা দিয়েছে বাঘ রক্ষা বিষয়ক কমিটি ও সচেতন মহলে।
গত কয়েক বারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাঘ গণনার ফলাফলে দেখা যায়, ১৯৮২ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৫৩ টি। ২০০৪ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী ও বন বিভাগের যৌথ শুমারিতে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৪০টি তে। ২০১৩ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা হয় ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে ১১৪ টি বাঘের অস্তিত্ব পান বিশেষজ্ঞরা। এভাবে বাঘ গণনার নি¤œমুখী ফলাফলে বাঘের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন বনরক্ষীসহ বন সুরক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।তবে বর্তমানে বনে বাঘের আশানুরূপ উপস্থিতি আশার সঞ্চার করেছে বন ও পরিবেশবাদীদের মাঝে জেলে ও মৌয়ালী সূত্র জানায়, পূর্ব সুন্দরবনের বিভিন্ন স্পটে প্রায়ই মিলছে বাঘের দেখা। পর্যটকদের দৃষ্টিও এড়াচ্ছেনা বাঘের আনাগোনা।
বনজীবি ও বন রক্ষীরা জানান, গত ১০ বছরেও এভাবে বনে বাঘের চলাচল লক্ষ্য করা যায়নি। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকে রয়েছেন তারাও।
স্থানীয় সচেতন মহল জানায়, সুন্দরবন রক্ষায় বাঘের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। বাঘ বৃদ্ধির ঘটনা সুন্দরবনের জন্য একটি সুখবর। বনরক্ষীসহ টাইগার টিমের সদস্যদের প্রতি বাঘ রক্ষায় আরও বেশী দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের দাবী জানিয়েছেন তারা।
এসএ/