চলনবিলে বাউৎ উৎসব


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


চলনবিলে বাউৎ উৎসব

পাবনা প্রতিনিধি: এখন মাঘ মাস কনকনে শীত আর হালকা কুয়াশা চারিদিকে।  কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের আলো ফুটছে। কুয়াশা কাটতে না কাটতেই বিলের দিকে ছুটছেন মানুষ। সারি সারি লাইন ধরে সরিষা ক্ষেতের মেঠো পথে মানুষের ঢল। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য সবার কাঁদে মাছ ধরার সরঞ্জাম। যাচ্ছেন সবাই বাউৎ উৎসবে। এ যেন প্রকৃতির এক অপরুপ সৌন্দর্য। 

শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকালে চলনবিল অধ্যূষিত পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল কাটা গাং এ চলে মাছ ধরার উৎসব। 

পলো ও বিভিন্ন প্রকার জাল নিয়ে অসংখ্য সৌখিন মৎস্য শিকারি  মেতেছেন এই উৎসবে। মাছ ধরার এই উৎসবের নাম বাউৎ উৎসব। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে চলনবিলে এই বাউৎ উৎসবের রেওয়াজ। বিলের পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পদ্ধতিতে মাছ ধরা হয়ে থাকে। আগে বিলে প্রচুর মাছ ছিল, তাই এই মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই পলো দিয়ে অসংখ্য মৎস্য শিকারি মাছ ধরত। কিন্তু এখন আর আগের মত মাছ পাওয়া যায়না। বাউৎ উৎসবে ধনী গরিবের ভেদাভেদ নেই এই। যার পলো আছে সেই নামতে পারে শিকারে। মাছ ধরতে বিলে নেমেছে অসংখ্য মানুষ। হৈচৈ আর চেচামেচিতে মুখোর চারপাশ। বাউৎ উৎসবে পাবনার আটঘরিয়া, ঈশ্বরদী ও চাটমোহরের শতাধিক মানুষ অংশ নিয়েছে। 

চাটমোহর মূলগ্রাম থেকে  বিলে মাছ ধরতে আসা রফিকুল ইসলাম (৭০) সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে আমরা বিভিন্ন বিলে মাছ ধরতে আসি আজ এসেছি কাটা গাং এ মাছ ধরতে। পলো দিয়ে মাছ ধরা আমার দীর্ঘদিনের শখ। তবে আগেকার তুলনায় দেশীয় প্রজাতির মাছ কমে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিলে মাছ ধরতে আসা আবু বক্কর (৫১) সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি ১৩ বছর বয়স থেকে মাছ ধরি। আগে বিভিন্ন বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর আগের মত মাছ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে চায়না জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে মাছ নিধন করায় খালে বিলে এখন মাছ কমে গেছে। তাই এখন আর তেমন মাছ নেই এই বিলে।

ঈশ্বরদীর মূলাডুলি থেকে আসা মশিউর নামে এক সৌখিন মাছ শিকারির সাথে কথা হলে তিনি জানান, শখ করে মাছ ধরতে এসেছি আমি, মাছ পাই আর না পাই বাউৎ উৎসবে মাছ ধরা আমার অন্যতম শখ।

এসএ/