সুদক্ষ, সুযোগ্য, সুশীল নান্দনিক এসপি জাহিদুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
সরকারি আদেশের ভিত্তিতে জেলার পুলিশ প্রধান হিসেবে আসেন একজন এসপি। চুয়াডাঙ্গা জেলা ঘোষিত হয় ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ। ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলেও চুয়াডাঙ্গাতে পুলিশের উদ্ভব হয় সর্বপ্রথম ১৮০৮ খ্রিষ্টাব্দে। ১৮০৮ খ্রিষ্টাব্দে চুয়াডাঙ্গা কালুপলিয়া, দামুড়হুদা ও হার্দিতে থানা প্রতিষ্টা করে সর্বপ্রথম ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী। ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে থানা প্রতিষ্ঠা করে দৌলৎগঞ্জ। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে নাম পরিবর্তন করে বৃটিশ সরকার প্রতিষ্টা করে জীবননগর থানা। ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে কালু পলিয়া থানায় স্থানীয় জনগনের হাতে জনৈক দারোগা নিহত হলে কালুপলিয়া থেকে থানা গুটিয়ে নিয়ে আসে চুয়াডাঙ্গায়। বুজরুক গড়গড়ি মৌজায় ১৬ নং খতিয়ান দাগ নং আরএস ৫৩১৯ তে ১.২৭৭৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে হার্দি থেকে থানা সরিয়ে আনা হয় আলমডাঙ্গায়। তবে দামুড়হুদা থানা একই জায়গায় অবস্থিত। ব্রিটিশ সরকার মহকুমা প্রতিষ্ঠিত করার ৬১ বছর পূর্বে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বিদ্রোহী চাষীদের দমনের লক্ষে থানা পুলিশ প্রতিষ্ঠা করে। ১৮৬৯ খ্রিষ্ঠাব্দে মহকুমা প্রশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মহকুমা পুলিশ প্রশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গায়। মহকুমা পুলিশের প্রধান ছিলেন SDPO তথা Sub Divisional Police SDPO। পদটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে চুয়াডাঙ্গা জেলা ঘোষিত হওয়ার সাথে সাথে। ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা SDPO দের নামের তালিকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে দায়িত্ব প্রাপ্ত এসপি দের নিয়ে আমি আলোকপাত করব না। আজকের আলোচনার মধ্যমনি বর্তমান SP তথা সুপারিনটেনটেন্ট অব পুলিশ তরুন, সুদর্শন পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরার কৃতি সন্তান। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মাগুরা সদর থানার বেরোইন গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা মরহুম মরাফত হোসেন। বেরোইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার হাতে খড়ি। ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে বেরোইল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি। এম.এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ১৯৯৫ তে এইচএসসি ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাষ্টার্স সম্পন্ন করেন মর্যাদার সাথে। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিসিএস এ উত্তির্ন হন এবং ডিএমপিতে যোগদান করেন ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে। বাংলাদেশ পুলিশের সম্মানিত সদস্য হিসাবে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে সিআইডি’র সাইবার ক্রাইম শাখায় জামালপুর সার্কেলে সুনামেমর সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
জাতিসংঘ মিশনের অধিনে ২০১০ থেকে ২০১১ এর মে পর্যন্ত ১বছর ৭দিন দায়িত্ব পালন করে দেশে ফিরে আসেন। প্রথম পুলিশ সুপার হিসেবে নারায়নগঞ্জ শিল্পাঞ্চল পুলিশের শাখায় দায়িত্ব পারন করেন ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে। তার আগে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম এসপি হিসাবে পদোন্নতি পেয়ে ডিএমপি হেড কোয়াটারে দায়িত্ব পালন করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ প্রধান হিসাবে যোগদান করেন ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই সেপ্টেম্বর। সীমান্তঘেষা জেলা হিসাবে চুয়াডাঙ্গায় মাদকের বিস্তার ঘটে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেই জাহিদুল ইসলাম মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান অত্যান্ত আন্তরিকতার সাথে। দক্ষতা ও মেধা দিয়ে সম্পূর্ন ব্যক্তিগত কৌশলে মাদকমুক্ত জীবন, মাদকমুক্ত পরিবার ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সংকল্প বদ্ধ হয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবক ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তরুণ, উদ্যমী এসপি জাহিদুল ইসলাম অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের মাধ্যমে মোটিভেশনের আহবান জানান। পরিশেষে সুন্দর সিরামিকমগ টিশার্ট প্রদান করেন। এরপরেও যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ব্যর্থ হয় তাদেরকে আইনের আওতায় নিতে বাধ্য হন।
সুযোগ্য পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা জেলায় মাদকের সাথে জড়িত ৫জন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন, ১১জন পুলিশ সদস্যকে চাকুরিচ্যুত করে বিরল দষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সমগ্র জেলায় টহল পুলিশ সহ ১৫৩টি দলে বিভক্ত করে মাদক, সন্ত্রাস, ডাকাতি, অরাজগতা নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছেন দক্ষতার সাথে। তুলনামূলকভাবে এসপি জাহিদুল ইসলাম আসার পরে চুয়াডাঙ্গার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আতংকে আছে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবিরা। তিনি বলেন শুধু আইন আর পুলিশ দিয়ে মাদকমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে প্রতিটি পরিবার সহ সচেতন ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসএ/