স্বামীর বিয়ে অস্বীকার, অনশনে স্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্বামীর বিয়ে অস্বীকার, অনশনে স্ত্রী

পটুয়াখালীর দুমকিতে কাবিন বিহীন গোপন বিয়ের দুই বছর পরে তরুণী গৃহবধুর বিয়ে অস্বীকার করলো স্বামী আবুবক্কর। নিরুপায় তরুণী স্ত্রীর আইনী স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠায় স্বামীর বাড়িতে ওঠলে স্বামী-দেবর-শ্বাশুড়ি লাপাত্তা হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিন রাজাখালীর গাবতলি এলাকায়। 

গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই ) সকাল থেকে স্বামীর বাড়িতে তরুণী গৃহবধুর অনঢ় অবস্থান নেয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।  

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি করিম গাজীর কিশোরী মেয়ে ফারজানা বেগমের (২১) সাথে গাবতলী গ্রামের মৃত আলমগীর মৃধার ছেলে আবুবকর সিদ্দিকের (২৩) সাথে ৪ বছর পূর্বে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়। (কনের বয়স ১৮ বছরের কম থাকায় কাবিন বিহীন বিয়ে হয়)। ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর পটুয়াখালী নোটারী পাবলিকের এভিডেভিড ঘোষনায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য্যে বিয়ের স্বীকৃতি দেয়া হয়। বিয়ের পরে একটানা দেড়বছর সংসার করার পর সুচতুর স্বামী আবুবকর ছিদ্দিক স্ত্রী ফারজানাকে তার বাবার বাড়ি রেখে উপার্জনের জন্য ঢাকায় চলে যায়। বাড়িতে শাশুরী-দেবরদের সাথে যৌতুকের বায়না নিয়ে ফারজানার কলহ দেখা দেয়। বিষয়টি ফোনে স্বামী আর আবুবকরকে জানালে সে তার মা-ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সৃষ্ট বিষয়ে দাম্পত্য কলহ নিরসনে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার পারিবারিক বৈঠক বসলেও কোন সুরাহা না পেয়ে ফারজানা যৌতুক নিরোধ আইনে দু’বছর পূর্বে স্বামী-দেবর ও শাশুরীর নামে পটুয়াখালীর স্পেশাল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। (মামলা চলমান) মামলা দায়েরের পর থেকেই কাবিন বিহীন বিয়ে সরাসরি অস্বীকার করতে শুরু করে চালাক স্বামি ও তার পরিবারবর্গ। এ কারণে গত মঙ্গলবার স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ে ফারজানা তার স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নিলে ফারজানার উপস্থিতি টের পেয়ে স্বামী শাশুরী ও দেবর লা-পাত্তা হয়ে গেছে। এ অবস্থায় প্রতিবেশীদের সহায়তায় আবুবকরের ঘরের বারান্দাতে ৫ দিন যাবৎ অবস্থান করছে ফারজানা।

ফারজানা অভিযোগ করে জানায়, ‍“সে তার (আবুবকর) সাথে সংসার করেছি। এখন কাবিন নেই বলে আমাকে স্ত্রী বলে অস্বীকার করছে। স্ত্রীর মর্যাদা না পাওয়া পর্যন্ত এ বাড়িতেই অনশন চালিয়ে যাবো।এবং গত বৃহস্পতিবার রাতে আমি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় আমার দাদী শাশুরি দেখে ফেললে লোকজন পালিয়ে যায়।কিন্তু দাদী এবং আমি অন্ধকারে কাউকে চিনতে পারেনি।” 

আবুবকরের চাচা দেলোয়ার মৃধা বলেন, “এ বিয়েতে আমি ছিলাম। সম্প্রতি বৌ- শ্বাশুড়ীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তাই আবুবকরকে তার মা বলে দিয়েছে - তুই বৌ অস্বীকার করবি আর পরিষদে অভিযোগ দিবি।” 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুবকরের মা অস্বীকার করে বলেন, “কলমা-কাবিন কিছুই হয়নি। হানিফার ছেলে সোহাগ বাসার তালা ভেঙে ঘরে তুলে ফরজানাকে উঠিয়ে দিয়ে গেছে। অভিযুক্ত স্বামী আবুবকর মুঠো  ফোনে বলেন, আমি ফারজানা চিনি না, জানি না। তার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে এ মর্মে কোন প্রমাণ থাকলে তবে তা নিয়ে আসুক।”

 পালাতক কেন? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন। 

দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবদুস সালাম জনবাণীকে বলেন, “এ বিষয়ে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

এসএ/