উজিরপুরে সড়কে আবারো মৃত্যুর মিছিল: নিহত ৫, আহত ২০
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুরের নতুন শিকারপুর নামক স্থানে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ২০ জন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে দূর্ঘটনাটি ঘটে। এ সময় রাস্তার দুই পার্শ্বে গাড়ীর দীর্ঘ লাইনে ১ ঘন্টা সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উজিরপুর থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাপফিক পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি শেখ বেল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন রুহুল আমিন(৪৫), আবদুর রহমান(৪৬,) মো. হাসান(৩৬), নুরুল আমিন(৪৭) ও শহীদুল ইসলাম(৪০)। নিহতদের সবার বাড়ি গাজীপুর কোনাবাড়ী সিটি কর্পোরেশন ১১ নং ওয়ার্ডে। লাশগুলো উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া আহতদের মধ্যে গাজীপুর জয়টেক কোনাবাড়ী সিটি কর্পোরেশন ১১ নং ওয়ার্ডের লিটন(৩০), নুরুল ইসলাম(৪০), লামিয়া ইসলাম(৩০), আনসার আলী খান(৬০), মাইক্রোবাস চালক আছুর উদ্দিন রানা(৫০), হারুন অর রশিদ(৪০)। মোল্লা ট্রাভেলস এর যাত্রী পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জের লিমা(২০), রিমা আক্তার (১৭), ইমরান(২২), হামিদা বেগম(৪৮), সুফিয়া খানম(৫০)। গুরুতর ৬জনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করলে শহীদুল ইসলাম(৪০) তিনি হাসপাতলে মারা যান। বাকীদের বিভিন্ন স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে সেবা প্রদান করা হয়।
জানা যায়, ঢাকা গাজীপুর জয়টেক কোনাবাড়ি থেকে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাস (ঢাকা-মেট্রো-চ-২৯-২৬৫৩) মহাসড়কের নতুন শিকারপুর নামক স্থানে আসলে চাকা পাংচার হওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিকে চলে যায়। এ সময় বরগুনা থেকে ছেড়ে আসা মোল্লা ট্রাভেলস(ঢাকা-মেট্রো-ব-১৩-০৫৪৮) একটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের ৪ যাত্রী নিহত হয়।
দূর্ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক ছুটে যান উজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ মজিদ সিকদার বাচ্চু, পৌর মেয়র মোঃ গিয়াস উদ্দিন বেপারী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন।
প্রত্যক্ষদর্শী মুদি ব্যবসায়ী মিরাজ হাওলাদার জনবাণীকে জানান, “বেলা ১২টায় একটি মাইক্রোবাসের চাকা বিকট শব্দ করে পাংচার হয়ে বিপারীত দিকে চলে আসে। অপরদিক থেকে মোল্লা ট্রাভেলসএকটি বাস সজোরে ধাক্কা দিলে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ সময় আরোহীরা ভিতরে আটকা পড়ে আহত ও নিহত হয়।”
তিনি আরো জানান, “পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে আগের তুলনায় এই রাস্তায় ৫ থেকে ৭গুন গাড়ি বেশি চলাচল করে। রাস্তা অত্যন্ত সরু হওয়ার কারণে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে। এই রাস্তাটি দ্রুত ফোরলেনে উন্নীত হওয়া প্রয়োজন। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বামরাইল থেকে মেজর এম.এ জলিল সেতু পর্যন্ত এ যাবৎ প্রায় শতাধিক লোক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়।”
এ তথ্য নিশ্চিত করে উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদজনবাণীকে জানান, “এ সংবাদ পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। এ ছাড়া দুটি যানের ২০ যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
গৌরনদী হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট মাহাবুব ইসলাম জনবাণীকে বলেন, “পটুয়াখালী থেকে ঢাকা যাচ্ছিল মোল্লাহ পরিবহণের একটি বাস এবং ঢাকা থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল একটি একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস।”
তিনি বলেন, “উজিরপুরের নতুন শিকারপুরে এলে মাইক্রোবাসটির পেছনের একটি চাকা পাংচার হয়ে সড়কের মাঝেই থেমে যায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মোল্লাহ ট্রাভেলসের বাসটি সজোরে ধাক্কা দেয় মাইক্রোবাসটিকে। বাসচালক বা তাঁর সহকারীকে আটক করা যায়নি। তবে, বাস ও মাইক্রোবাস পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।”
এসএ/