জনতার ভালোবাসায় সিক্ত জন্ম নেওয়া এক নেতা-মনিরুল হক চৌধুরী

কুমিল্লা একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষিত জনপদের শহর—যে শহরের পরতে পরতে মিশে আছে প্রাচীন বাংলার পাল রাজাদের ইতিহাসের ঘ্রাণ। এই জনপদে একসময় বাজত মানুষের ছন্দময় জীবনের সুর। তখনকার রাজনীতি মানে ছিল ভালোবাসা—মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, দুঃখে পাশে দাঁড়ানো, আর দিনের ক্লান্তির শেষে আশার আলো জ্বালানো।
বিজ্ঞাপন
স্বৈরাচার সরকারের দের দশকের রাজনীতিতে মাঠ হয়ে উঠেছিল যেন অসুস্থ এক প্রতিযোগিতার। রাজনীতি মানেই হয়ে উঠেছিল মিথ্যা আর ফাঁকা প্রতিশ্রুতি। সেই কারণেই মানুষের চোখে জন্ম নিয়েছিল সন্দেহ, মুখে ভর করেছিল ক্লান্তি, আর মনে এসেছিল নাবিশ্বাসের ছায়া। কুমিল্লার রাজনৈতিক পরিবেশ যখন দিশেহারা অমানিশায় নিমজ্জিত, ঠিক সেই সময়েই আলোকবর্তিকা হয়ে হাজির হন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ জনাব মনিরুল হক চৌধুরী।
সবকিছু ছাপিয়ে রাজনীতির হানাহানির মাঝেও কুমিল্লার সবার প্রিয় নেতা, নীরবে কাজ করা অথচ দৃঢ়চেতা মানুষ—মনিরুল হক চৌধুরী আছেন। তিনি প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন, রাজনীতি মানে তৃণমূল মানুষের দৃশ্যমান কাজের অঙ্গীকার রক্ষা করা, আর সেই মাধ্যমেই গড়ে ওঠে জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক। সেখানে আর্থসামাজিক উন্নয়নে লাভের হিসাব নয়—আছে শুধু মানুষের ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা। তাঁর রাজনীতি যেন এক শান্ত নদীর গভীরে নিরবে বয়ে চলার মতো; তাঁর কাজগুলো ছুঁয়ে যায় খেটে খাওয়া মানুষের জীবন।
বর্তমানে তিনি কুমিল্লা–৬ আসনের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। তাঁর কাছে দলের মনোনয়ন কোনো নতুন সূচনা নয়; বরং পুরোনো সম্পর্ক ও কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মাত্র। তিনি সবসময় জনগণের পাশে ছিলেন, আজও আছেন গণমানুষের মাঝেই। প্রতিদিন তিনি যাচ্ছেন পাড়া-মহল্লায়, দোকানের সামনে, মানুষের উঠোনে—চেনা মুখগুলোকে দেখছেন আপনজনের মতো, যাদের সঙ্গে তাঁর বন্ধন বছরের পর বছর গড়ে উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি কেবল ভোট চাইছেন না; বলছেন উন্নয়নের কথা, বলছেন সেই কুমিল্লার গণমানুষের হারানো ঐতিহ্য ও গৌরবের ইতিহাসের কথা। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সেই গৌরবোজ্জ্বল সময়কে ফিরিয়ে আনার, কুমিল্লাকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের। যেন কুমিল্লা নগরীর মহাসাগরে পথহারা মানুষদের তীর দেখাচ্ছেন এক নির্ভীক নাবিকের মতো।
তাঁর কণ্ঠে রাজনীতির মিথ্যা তর্জন বা ফাঁকা আশ্বাসের গর্জন নেই—আছে এক আত্মবিশ্বাসের দীপ্তি। তিনি বলেন, “আমি আপনাদের মতো নিতান্তই একজন সাধারণ মানুষ। আমার সুখ–দুঃখ এই শহরের মা ও মাটির সঙ্গে জড়ানো।” তিনবারের সংসদ সদস্য হয়েও মনিরুল হক চৌধুরীর সাদামাটা যাপিত জীবনে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি—যা কুমিল্লার মানুষ জানে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ বাড়েনি, ব্যাংক হিসাবের অঙ্কও নয়; বরং তিনি অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিকে চলে গেছেন।
তিনি বিশ্বাস করেন, “জনগণের ভালোবাসাই আমার একমাত্র সম্পদ।” তাঁর সম্পদের খাতায় নেই ব্যাংকের অঙ্ক, নেই গাড়ির বহর, নেই বহুতলের জকমকে জানালা। কুমিল্লার পিতৃপ্রদত্ত পুরোনো সেই বাড়ি এখনো ধরে রেখেছে তাঁর বাবার সময়ের অমলিন স্মৃতি—যে বাড়িটাই তিনি ও তাঁর ভাইবোনদের একমাত্র ভালোবাসার কেন্দ্র; যেখানে আজও মিশে আছে তাঁদের হাসি, স্মৃতি বিজড়িত পরিবারের মায়ার ছায়া। আর ঢাকায় তিনি থাকেন শ্বশুরবাড়ির একটি সাধারণ বাসভবনে—যেন সরলতাকেই বেছে নিয়েছেন রাজনীতির অলঙ্কার হিসেবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি এমন একজন মানুষ, যিনি দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর সবার আগে পোস্টার লাগাতে বা সভা করতে যাননি; বরং গিয়েছিলেন তাঁর জান্নাতবাসী বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করতে। ভোরের আলো তখনও ছড়ায়নি—মাটিতে কুয়াশা, বাতাসে আজানের ধ্বনি। তিনি একা দাঁড়িয়ে ছিলেন দুটি কবরের পাশে; কোনো স্লোগান ছিল না, ছিল শুধু তাঁর নীরব প্রার্থনা—“আমার কাজের মাধ্যমে যেন আমি আপনাদের নামকে কখনো ছোট না করি।”
সেই দৃশ্য যারা দেখেছিল, তারা জানে—এমন রাজনীতিক আজকাল সচরাচর দেখা যায় না। একজন রাজনীতিক, যিনি ক্ষমতার দম্ভে নয়, শ্রদ্ধায় মাটিতে নত হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। রাজনীতির কোলাহলের এই যুগে এমন নীরবতা মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। কারণ আজ রাজনীতি গর্জে ওঠে প্রতিশ্রুতির ভাষায়, কিন্তু এই মানুষটি রাজনীতি শুরু করেছেন বিনয় আর নির্মোহ মন্ত্রে। তাঁর হাতে ছিল না পতাকা, তবু চোখে ছিল আলোর দীপ; কণ্ঠে ছিল না স্লোগান, তবু অন্তরে ছিল বিশ্বাসের শপথ—“মানুষের ভালোবাসাই যেন আমার রাজনীতি হয়।”
নীরবতাই আজ তাঁর শক্তি, তাঁর বিনয়ই তাঁর চলার আলো। মনিরুল হক চৌধুরীর রাজনীতি কোনো কৌশল নয়; এটি মানুষের প্রতি এক নিঃস্বার্থ ও অবিনাশী ভালোবাসার নাম। তিনবারের পরীক্ষিত সাংসদ হিসেবে তিনি কুমিল্লার উন্নয়নের রোল মডেল। মানুষ তাঁকে “উন্নয়নের কারিগর” নামে ডাকে, কারণ তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্তে আছে মানুষের মঙ্গলকামনা, প্রতিটি পদক্ষেপে আছে বিবেকের পরশ।
বিজ্ঞাপন
অথচ যে মানুষটি নিজের কর্মীদের পাঁচ হাজার টাকাও দিতে পারেন না, তবু দলে দলে কর্মীরা তাঁর পাশে ছুটে আসেন—যেন ভালোবাসাই তাঁদের একমাত্র প্রেরণা। এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বহুবার জেল খেটেছেন, জুলুম সহ্য করেছেন এবং স্বৈরশাসকের অত্যাচার, তবু তাঁর নামে নেই কোনো দুর্নীতির অভিযোগ, নেই অন্যায়ের ছায়া।
তাঁর কর্মীরা বলেন—“মনির ভাই আমাদের টাকা দেন না, কিন্তু দেন সাহস, দেন আশ্বাস, আর শেখান—রাজনীতি মানে মানুষের সেবা।” তাঁদের চোখে মনিরুল হক চৌধুরী শুধু একজন রাজনীতিক নন; তিনি এক আলোকবর্তিকা—যিনি দেখিয়েছেন ও শিখিয়েছেন, নীতিতে অটল থাকলে রাজনীতিতে ও পবিত্র থাকা যায়।
তিনি প্রমাণ করেছেন—রাজনীতি কোনো কৌশলের বিষয় নয়; এটি নীতির প্রতিজ্ঞা। আজকের রাজনীতির ঝড়ে তিনি যেন এক প্রাচীন বৃক্ষ—নিঃশব্দ, দৃঢ়, অথচ আশ্রয়দাতা; যার ছায়ায় মানুষ ফিরে পায় সান্ত্বনা, আস্থা ও মমতার পরশ।
বিজ্ঞাপন
আমি বিশ্বাস করি—যেদিন আমাদের দেশের রাজনীতিতে মনির ভাইয়ের মতো মানুষের সংখ্যা বাড়বে, সেদিন রাজনীতি আবার মানুষের হৃদয়ে ফিরে আসবে। আর বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াবে বিশ্বের বুকে—সততা ও মর্যাদার প্রতীক হয়ে।
লেখকঃ- অভিনেতা পারভেজ আবীর চৌধুরী ।








