বিকল্প কী? যদি তারা না আসে তাহলে বিকল্প কে?

ইসলাম কায়েম করবেন? আমি আলহামদুলিল্লাহ মনেপ্রাণে কুরআন-সুন্নাহের শাসন চাই। খেলাফাতে বিশ্বাস করি।প্রচলিত গণতন্ত্র ও পূজিবাদকে সব দিক থেকে ক্ষতিকারক বলে জানি। গণতন্ত্র কখনো মানুষের মুক্তির সনদ হতে পারে না। ইউরোপ আমেরিকার সাধারণ জনগণকে মুক্তি দিতে পারে নাই। ভারতে পারে নাই। আর আমরা মুসলমানদের জন্য গণতন্ত্র ও পূজিবাদ কল্যাণকর হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ আমাদের আইনের উৎস হওয়া আবশ্যক কুরআন ও সুন্নাহ।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু আমাদের এই দেশে এখন এমন একটা দল ক্ষমতায় আসতে ওঠেপড়ে লেগেছে যেই দলটা এই দেশের জন্মের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাদের দ্বারা এই দেশের কল্যাণ হবে, মুসলমানদের কল্যাণ হবে তা আমি কস্মিনকালেও বিশ্বাস করি না। আগের জালিম প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তার পরিবার-পরিজন হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছে এই দেশের জনগণ থেকে ঠিক সেভাবে তারাও তাদের নেতৃত্ব হত্যার প্রতিশোধ নিবে এই দেশের সাধারণ জনগণ থেকে। ওরা কতটা আগ্রাসী ও বিধ্বংসী এবং প্রতিশোধপরায়ণ হতে পারে তা কল্পনাও করতে পারবেন না।
তারা শুধু বুঝে তাদের দলের লোক। আপনি তাদের হলে আপনার জন্য সব আছে। আপনি যতদিন পর্যন্ত মনেপ্রাণে তাদের না হতে পারবেন আপনাকে তারা মুখে মুসলমান বললেও অন্তরে মুসলমান মনে করে কিনা আমার সন্দেহ আছে। তাদের বানানো ইজমকেই তারা একমাত্র ইসলাম মনে করে। এর বাইরের কোনো ইসলামে তারা বিশ্বাস করে না। এখন জোটে তারা যাদেরকে নিয়েছে সময় সুযোগে তাদেরকে ছুড়ে ফেলতে তাদের এক মূহুর্তও ভাবতে হবে না। যেভাবে তাদের ত্রিশ বছরের রাজনৈতিক সাথী দলকে ছুড়ে ফেলে পরগাছা থেকে এখন নিজেরাই বৃক্ষ হতে ওঠেপড়ে লেগেছে এবং প্রশাসনে ভালো সেট আপ অলরেডি দিতে সক্ষম হয়েছে। সেই হিসাবে আগামী নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও অবাধ এবং নিরপেক্ষ হবে তা নিয়েও আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
তবে যেই দলটার সাথে এই দেশের আলো, বাতাস, পানি , মাটি, বায়ু, শিক্ষা -সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচার এবং আপামর জনতার শেকড়ের সাথে সম্পর্ক নাই তারা আমাদেরকে শাসন করতে পারবে না। এই দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মুসলমান এখনো সুফি ওলী আওলিয়া পীর-ফকিরের দিয়ে যাওয়া সহজ ইসলামকেই মনেপ্রাণে লালন করে বলে আমার বিশ্বাস। আপনাদের বিদেশ থেকে আমদানী করা ভিন্ন ধারার রাজনৈতিক ইসলামী কোনো ইজম দিয়ে এই দেশের কৃষক শ্রমিক জনতার আধ্যাত্মিক খুড়াক যোগাতে পারবেন না।
বিজ্ঞাপন
এখন আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের পক্ষে এমন কোনো ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠনে যুক্ত হওয়াও সম্ভব না যেখানে মূর্খ আউল-বাউলরা নেতৃত্বে বসে আছে। আমাদের মানুষজনের গড়া সংগঠন হওয়ার পরও আমরা তা পারব না। আমাদের জন্য এটা উভয় সংকট। কাজেই আমাদের জন্য এখন নিজেকে গড়া এবং সমাজের মানুষ গড়ার দিকে মনোযোগ দেয়াই সর্বোত্তম হবে বলে মনে করি। রাজনীতি সম্পর্কে অবগত থেকে সচেতনভাবে রাজনৈতিক সংগঠন এড়িয়ে চলাই আমাদের কৌশল হওয়া উচিত।
وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ لِيَنْفِرُوْا كَآفَّةً ؕ فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآٮِٕفَةٌ لِّيَـتَفَقَّهُوْا فِى الدِّيْنِ وَ لِيُنْذِرُوْا قَوْمَهُمْ اِذَا رَجَعُوْۤا اِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُوْنَ
মু’মিনদের সকলের একসঙ্গে অভিযানে বাহির হওয়া সংগত নয়, উহাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন, যাহাতে তাহারা দীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করিতে পারে এবং উহাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করিতে পারে, যখন তাহারা তাহাদের নিকট ফিরিয়া আসিবে যাহাতে তাহারা সতর্ক হয়।
বিজ্ঞাপন
সূরা নম্বর: ৯ আয়াত নম্বর: ১২২
وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَيْرِ وَيَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِؕ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
"তোমাদের মধ্যে এমন একদল হউক যাহারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করিবে এবং সৎকর্মের নির্দেশ দিবে ও অসৎকর্মে নিষেধ করিবে; ইহারাই সফলকাম।"
বিজ্ঞাপন
সূরা নম্বর: ৩ আয়াত নম্বর: ১০৪
আমরা যদি নিজেদেরকে গড়তে পারি এবং সমাজের মানুষদের গড়তে পারি তাহলে খেলাফাত তথা ইসলামী শাসনব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে গিফট হিসেবে দান করবেন ওয়াদা রয়েছে এবং দীন কায়েমেরও ওয়াদা রয়েছে।
وَعَدَ اللّٰهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَـيَسْتَخْلِفَـنَّهُمْ فِى الْاَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِيْنَهُمُ الَّذِى ارْتَضٰى لَهُمْ وَلَـيُبَدِّلَــنَّهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ خَوْفِهِمْ اَمْنًا ؕ يَعْبُدُوْنَنِىْ لَا يُشْرِكُوْنَ بِىْ شَيْــًٔــا ؕ وَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذٰ لِكَ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ
বিজ্ঞাপন
তোমাদের মধ্যে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিতেছেন যে, তিনি অবশ্যই তাহাদেরকে পৃথিবীতে শাসনক্ষমতা দান করিবেন, যেমন তিনি শাসনক্ষমতা দান করিয়াছিলেন তাহাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাহাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করিবেন তাহাদের দীনকে যাহা তিনি তাহাদের জন্য পসন্দ করিয়াছেন এবং তাহাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে তাহাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করিবেন। তাহারা আমার ‘ইবাদত করিবে, আমার কোন শরীক করিবে না, অতঃপর যাহারা অকৃতজ্ঞ হইবে তাহারা তো সত্যত্যাগী।
সূরা নম্বর: ২৪ আয়াত নম্বর: ৫৫
উপযুক্ত দীনি মানুষ গড়ার সাথে সাথে আমাদের বেশি বেশি করে চেষ্টা করা উচিত ইসলামিক স্কুল, ইউনিভার্সিটি, ব্যাংক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার , হসপিটাল ক্লিনিক , আইটি সেন্টার, চেইন শপ , এগ্রোবিজনেস ইত্যাদি গড়ে তোলার। অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ঠিক করতে হবে , সেইসাথে দক্ষ হিউম্যান রিসোর্স গড়ে তুলতে হবে। এমন হিউম্যান রিসোর্স যারা হবে ইফিসিয়েন্ট এবং মুত্তাকি-পহেজগার ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত।
বিজ্ঞাপন
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তওফিক দান করুন। আমিন।
কৃত: সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারি








