উচ্চশিক্ষার পর এবার সমালোচনার মুখে পোশাকশিল্প

ডেনমার্কে বাংলাদেশকে ঘিরে নেতিবাচক প্রচারণা থামছেই না। সম্প্রতি দেশটির গণমাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে ঘিরে প্রচারিত এক ডকুমেন্টারিতে শ্রমিকদের নিম্ন মজুরি, নাজুক কর্মপরিবেশ ও পরিবেশ দূষণের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ব্যাপক হারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে রসকিল্ড ইউনিভার্সিটির একটি মাস্টার্স প্রোগ্রাম বন্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবির ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বাংলাদেশ।
‘টিভি ২ প্লে’-এর দুই পর্বের ডকুমেন্টারিতে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ ফ্যাশন ব্র্যান্ড বেস্টসেলারকে ঘিরে গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি সবুজ প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তারা শ্রমিকদের অতি নিম্ন মজুরি প্রদান, কারখানায় সহিংসতা ও পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে। প্রথম পর্বে গ্রিন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং পরিবেশ দূষণের বিষয় তুলে ধরা হয়। দ্বিতীয় পর্বে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন ও অমানবিক কর্মপরিবেশের চিত্র দেখানো হয়।
অভিযোগের জবাবে বেস্টসেলার দাবি করেছে, ডকুমেন্টারিতে উপস্থাপিত সব তথ্য সঠিক নয়। তারা প্রতি বছর প্রায় ৩৫০টি সমস্যা শনাক্ত ও সমাধানে কাজ করছে এবং কর্মপরিবেশ উন্নত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, উচ্চশিক্ষা খাতে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ নিয়ে ডেনমার্কেও ব্যাপক সমালোচনা চলছে। রসকিল্ড ইউনিভার্সিটির বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা ‘বিস্ফোরক বৃদ্ধি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে স্থানীয় মহল। ২০২০ সালে মাত্র ৬৬ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৯৭ জনে। এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেন এবং ২০২৬ সাল থেকে প্রোগ্রামটি পুরোপুরি বন্ধের ঘোষণা আসে।
বিজ্ঞাপন
ডেনমার্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এম শহীদুল করিম জানান, পোশাকশিল্প নিয়ে প্রচারিত ডকুমেন্টারির তথ্য সঠিক নয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিষয়েও বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে।
এদিকে, রসকিল্ড ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, প্রোগ্রাম বন্ধের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশিদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে এবং রাজনৈতিকভাবে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
একদিকে শিক্ষাখাতে সংকট, অন্যদিকে পোশাকশিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা। ডেনমার্কে একের পর এক ঘটনায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।