Logo

মালয়েশিয়ায় হঠাৎ কঠোর অভিযান, আতঙ্কে অবৈধ প্রবাসীরা

profile picture
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৩:৪০
31Shares
মালয়েশিয়ায় হঠাৎ কঠোর অভিযান, আতঙ্কে অবৈধ প্রবাসীরা
ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় অভিযান আরও জোরদার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। রাজধানী কুয়ালালামপুর, সেলাঙ্গর, পেনাং ও জোহরসহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিদিনই নির্মাণশিল্প, বাজার, রেস্তোরাঁ, বাণিজ্যকেন্দ্র ও আবাসিক এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি, ইন্দোনেশীয়, মিয়ানমার, নেপালি ও পাকিস্তানি নাগরিক আটক হচ্ছেন। বিশেষ করে চৌকিট, জালান সুলতান আজলান শাহ, গোম্বাক ও বান্দার বারুর মতো অভিবাসীপ্রধান এলাকায় হঠাৎ অভিযান চালানো হচ্ছে। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও শ্রম দপ্তরও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সহায়তা করছে।

আটক হওয়া বিদেশিদের অধিকাংশের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা তারা ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছেন। এসব প্রবাসীকে ইমিগ্রেশন ডিপোতে পাঠানো হচ্ছে এবং বৈধ কাগজপত্র না দেখাতে পারলে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অভিবাসন আইন-শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্যখাত ও শ্রমবাজারের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বৈধ পথে কর্মী আনার প্রক্রিয়া সহজ করতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনাও করছে সরকার।

অভিযান ঘিরে বৈধ প্রবাসীরাও আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকে কাজ থেকে ফেরার পথে হঠাৎ অভিযানে ধরা পড়ছেন। দূতাবাসগুলো নাগরিকদের সবসময় বৈধ কাগজপত্র বহনের পরামর্শ দিয়েছে।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার রক্ষায় মানবাধিকার সংগঠন নর্থ-সাউথ ইনিশিয়েটিভ (এনএসআই) মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের জন্য ১৮ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরের সময় প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলমের হাতে এ প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এনএসআই’র নির্বাহী পরিচালক আদ্রিয়ান পেরেইরা বলেন, অনৈতিক নিয়োগ প্রক্রিয়া, ঋণের বোঝা, মানবপাচার ও শোষণ প্রবাসীদের প্রধান সমস্যা।

শ্রমিক শাহেদুল ইসলাম বলেন, “উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে এসেছি, বেতনও নিয়মিত পাই না, আবার ভিসার সমস্যা হলে আটক হওয়ার ভয় থাকে।”

অন্য এক বাংলাদেশি কর্মী অভিযোগ করেন, “কর্মস্থলে বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হতে হয়। নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।”

বিজ্ঞাপন

অর্থনীতিবিদ ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ মনে করেন, বৈধ অভিবাসন শুধু মানবিক দায় নয়, অর্থনৈতিক প্রয়োজনও। মালয়েশিয়ায় প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় অংশ। বৈধভাবে কাজ করলে আয় বাড়বে, অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।

এনএসআই অসুস্থ ও মৃত শ্রমিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ও ক্ষতিপূরণ, আটক প্রবাসীদের আইনি সহায়তা, অবৈধদের বৈধকরণ, নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা, শিশুদের শিক্ষা, পাসপোর্ট নবায়ন সহজীকরণ, হেল্পলাইন চালু ও পাচার সিন্ডিকেট দমনের মতো সুপারিশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রবাসী নেতাদের মতে, প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া শ্রম সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।

বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, অভিযানের কঠোরতা যেমন অবৈধ অভিবাসন রোধে কার্যকর, তেমনি এটি বৈধ শ্রমিকদের মধ্যেও ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। তাই নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা জরুরি।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD