অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি বন্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা

বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্মবান্ধব রাখতে অনলাইন জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইল অ্যাপে এসব অনৈতিক কার্যক্রমের প্রচার ও বিজ্ঞাপন বেড়ে যাওয়ায় সরকার এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুযায়ী অনলাইন জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট তৈরি, প্রচার বা বিজ্ঞাপন প্রদর্শন দণ্ডনীয় অপরাধ। সরকার এই ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (NCSA) এবং সরকার একযোগে চারটি খাতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে-
১. মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা: দেশের সব অনলাইন নিউজ পোর্টাল, পত্রিকা এবং বিজ্ঞাপন সংস্থাকে সতর্ক করা হয়েছে। কোনোভাবেই জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। যদি গুগল অ্যাডসেন্স বা অন্যান্য কাস্টম বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এমন কনটেন্ট প্রচার হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২. সেলিব্রিটি ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সতর্কতা: দেশি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট নির্মাতাদের বলা হয়েছে, তারা যেন কোনোভাবেই অনৈতিক বা অবৈধ কনটেন্ট, পণ্য বা সেবার প্রচারে অংশ না নেন। অন্যথায়, তা সাইবার সুরক্ষা আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
বিজ্ঞাপন
৩. দেশি ও বিদেশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশে পরিচালিত বা অ্যাক্সেসযোগ্য কোনো দেশি বা বিদেশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট বা লিঙ্ক পাওয়া গেলে তা অবিলম্বে ব্লক করা হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের জরিমানা ও আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।
৪. আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মে ফিল্টারিং: গুগল অ্যাডসেন্স, মেটা অ্যাড, মোবাইল অপারেটর ও আইএসপিগুলোর জন্য স্থানীয় আইন অনুসারে ফিল্টারিং ও ব্লকিং ব্যবস্থা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সরকার জানিয়েছে, নৈতিক ও নিরাপদ সাইবার পরিবেশ গড়ে তুলতে সরকারি সংস্থা, মিডিয়া, প্রযুক্তি কোম্পানি ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। কেউ যদি অনলাইনে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কনটেন্ট দেখতে পান, তাহলে তা notify@ncsa.gov.bd ঠিকানায় রিপোর্ট করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই উদ্যোগ শুধু আইন প্রয়োগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি তরুণ সমাজের নৈতিক বিকাশ, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বর্তমানে সাইবার নিরাপত্তা ও নৈতিকতা নিশ্চিতে সিআইডি, বিটিআরসি, এনসিএসএ, এনটিএমসি, এনএসআই ও বিএফআইইউ যৌথভাবে কাজ করছে বলে জানানো হয়।