নতুন বছরের শুরুতেই বন্ধ হচ্ছে অতিরিক্ত নিবন্ধিত সিম কার্ড

আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিম ব্যবহারে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার। এক ব্যক্তির নামে থাকা মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বিজ্ঞাপন
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী (১ জানুয়ারি) থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ পাঁচটি নতুন সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। বর্তমানে যাদের নামে ছয়টিরো বেশি ১০টি সিম রয়েছে, সেগুলোর সংখ্যাও ধাপে ধাপে কমিয়ে পাঁচে নামিয়ে আনবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে আগের মতোই আপত্তি জানিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটররা। সরকার অনিয়ম ও অপব্যবহার রোধে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এদিকে সিম ব্যবহারের দিক থেকে বিশ্বের দেশগুলোর ভিতর বাংলাদেশের অবস্থান এখন নবম। এ তালিকায় বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো।
বিজ্ঞাপন
(বিটিআরসি) পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, রাস্তাঘাটে সিম কেনার সময় কিছু অসাধু বিক্রেতা গ্রাহকের অজান্তেই বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করছে। এসব তথ্য ব্যবহার করে অবৈধভাবে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করা হচ্ছে। পর্যালোচনায় আরও উঠে এসেছে, অনেক ক্ষেত্রে একজন গ্রাহক এক দিনেই দুইটির বেশি সিম কিনছেন, যা স্বাভাবিক নয় বলে মনে করছে সংস্থাটি।
(বিটিআরসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জহানা যায়, চলতি বছরের অক্টোবরে দেশে মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৮ কোটি ৫৯ লাখ, রবির ৫ কোটি ৭৫ লাখ, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৭৯ লাখ এবং টেলিটকের গ্রাহক ৬৬ লাখ ৭০ হাজার।
এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে দিকে দেশে সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৮ কোটি ৯৯ লাখ। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ছিল ১৮ কোটি ৯৬ লাখ, ২০২২ সালে ১৮ কোটি ১৬ লাখ এবং ২০২১ সালে ১৮ কোটি ১৩ লাখ। গত এক দশকে দেশে সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। ২০১৫ সালে যেখানে ব্যবহারকারী ছিল ১৩ কোটি ৩৭ লাখ, তা ২০২০ সালে তার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ কোটিতে।
বিজ্ঞাপন
সিম ব্যবহারের অপব্যবহার ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে গত আগস্টে এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে অতিরিক্ত সিম ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তনের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। (বিটিআরসি) সংস্থার তথ্যমতে আরও জানা যায়, দেশে বর্তমানে মোট নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ২৬ কোটি ৬৩ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি সিম সক্রিয় এবং বাকি সিমগুলো নিবন্ধিত হলেও নিষ্ক্রিয় রয়েছে।
এ বিষয়ে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, তিন মাস সময় দেওয়ার পরও যারা ডি-রেজিস্ট্রেশন করেননি, তাদের সক্রিয় সিম পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এমদাদ উল বারী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, পয়লা জানুয়ারি থেকে নতুন করে সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে একজন গ্রাহকের নামে পাঁচটির বেশি সিম রাখার সুযোগ আর থাকবে না।







