ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি মানে ইসরায়েলকে আত্মহত্যায় ঠেলে দেওয়া: নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াকে ইসরায়েলের জন্য “গলায় ছুরি ধরা”র শামিল বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার দাবি, ইউরোপীয় দেশগুলো এ স্বীকৃতির মাধ্যমে আসলে ইসরায়েলকে আত্মবিনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ অভিযোগ করেন তিনি। তবে তার বক্তব্য শুরুর আগেই অধিকাংশ রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে যান।
প্রায় খালি হলে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে নেতানিয়াহু বলেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার মানে হলো ইহুদি হত্যাকে প্রশ্রয় দেওয়া। একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আমাদের গলায় ছুরি ধরে রাখবে, এমন বাস্তবতা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।”
বিজ্ঞাপন
ইউরোপীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, “নিষ্ঠুর মিডিয়া আর ইহুদিবিরোধী জনতার সামনে দাঁড়ানোর সাহস আপনাদের নেই। তাই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে আপনারা হামাসকে পুরস্কৃত করছেন এবং ইসরায়েলকে আত্মহত্যার পথে ঠেলছেন। কিন্তু আমরা কখনোই এটি মানব না।”
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গত সোমবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেই সম্মেলনের আগে ও পরে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য ও লুক্সেমবার্গসহ বেশ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্মেলনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখল কার্যক্রম বন্ধের দাবিও তোলা হয় জোরেশোরে।
তবে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখল নীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি নেতানিয়াহু। বরং তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে “আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত” বলে আখ্যা দেন।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই নেতানিয়াহু দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিরোধিতা করে আসছেন। গত দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও তিনি তা থামানোর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনি সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আদেল আতিয়েহ বলেন, “জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর এই ভাষণ আসলে একজন পরাজিত মানুষের জবানবন্দি।”