যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াল পাকিস্তান ও আফগানিস্তান

দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৮ অক্টোবর) কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হচ্ছে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের শান্তি সংলাপ। এই সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে বলে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, পাকিস্তানের সরকারি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে দোহায় পৌঁছেছে। আজ শনিবার সেখানে পৌঁছাবেন আফগান প্রতিনিধি দলও।
তবে জিও নিউজ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর সূত্রে জানিয়েছে, পাকিস্তানি প্রতিনিধিরা আজ দোহায় রওনা হবেন।
বিজ্ঞাপন
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান সরকার কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই পাকিস্তান–আফগানিস্তান সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বর্তমানে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় স্থবির। সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মূল কারণ পাকিস্তানি তালেবানপন্থী সংগঠন তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), যাকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের দায়ে বহু বছর আগেই নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পরও টিটিপি কার্যত আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাদের প্রধান ঘাঁটি পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে, যা আফগান সীমান্তবর্তী এলাকা। সেখানে নিয়মিতই টিটিপি ও পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলছে।
বিজ্ঞাপন
ইসলামাবাদের অভিযোগ, কাবুলের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে। তবে আফগানিস্তান এ অভিযোগ সবসময় অস্বীকার করে আসছে।
গত ৯ অক্টোবর কাবুলে টিটিপির ওপর বিমান অভিযান চালায় পাকিস্তানি বাহিনী, যাতে সংগঠনটির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ, দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডার নিহত হন।
বিজ্ঞাপন
এর জবাবে ১১ অক্টোবর আফগান সেনারা খাইবার পাখতুনখোয়া সীমান্তে পাকিস্তানি সেনা চৌকিতে হামলা চালায়। পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তানও। ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা সংঘর্ষে দুই পক্ষের শতাধিক সেনা হতাহত হয়। আইএসপিআর-এর তথ্যমতে, ওই সংঘাতে আফগান বাহিনীর ২০০ এবং পাকিস্তানের ২৩ জন সদস্য প্রাণ হারান।
চার দিনব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর ১৫ অক্টোবর দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে সেই মেয়াদ শেষ হয় গতকাল শুক্রবার দুপুরে।
মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান আফগানিস্তানের কান্দাহার ও পাকতিকা প্রদেশে নতুন বিমান হামলা চালায়, যাতে অন্তত ৫০ জন নিহত ও দেড় শতাধিক আহত হন।
বিজ্ঞাপন
এই ঘটনার পর রাতেই দুই দেশ আবারও যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্র: জিও নিউজ