পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী: পাক সেনাপ্রধান

দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ অসীম মুনির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের আগ্রাসনের জবাব তাৎক্ষণিক এবং অত্যন্ত কঠোর হবে। দেশটির গণমাধ্যম ডেইলি জংকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
রবিবার (১৬ নভেম্বর) ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্ট হাউসে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ইবনে আল হুসেইনের সম্মানে দেওয়া মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানের ফাঁকে ডেইলি জংকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গত মে মাসে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের বিষয়ে ইঙ্গিত করে আকাশের দিকে আঙুল তুলে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানকে আমি বিজয়ী করিনি, আল্লাহই করেছেন।’’
‘‘মে মাসে পাকিস্তানের শত্রু পরাজিত হয়েছে; এটি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী; তাদের সৈন্যরা আল্লাহর নামে যুদ্ধ করেন।’’
বিজ্ঞাপন
ওই সময় চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী দেশের মাঝে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। দুই দেশের সৈন্যদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহু বেসামরিক ও সৈন্য নিহত হন। সেই সময় ভারতের সাতটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি জানায় পাকিস্তান ।
এপ্রিলের শেষের দিকে ভারত শাষিত কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৮ জনের প্রাণহানির ঘটনার প্রতিশোধে সন্ত্রাসীদের আস্তানা লক্ষ্য করে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। যদিও পেহেলগাম হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ হাজির করতে পারেনি নয়াদিল্লি।
পরে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ান-উম-মারসুস’ নামে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান শুরু করে। ওই সময় ভারতের ২০টির বেশি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর দাবি করে ইসলামাবাদ। পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের কয়েক দিনের সংঘাতে ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
পরে গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে এই সংঘাতের অবসান ঘটে। ভারত-পাকিস্তানের এই সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের অবসানে নিজে মধ্যস্থতা করেছেন বলে দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি।
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার সংঘাতে নেতৃত্বদানের জন্য সেনাপ্রধান মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করে। পাকিস্তানের এই সেনাপ্রধান বলেছেন, দেশের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে মে মাসের ঘটনার মতোই শক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
বিজ্ঞাপন
পবিত্র কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে ফিল্ড মার্শাল মুনির বলেন, ঈমানদাররা বিশ্বাস রাখলে শক্তিশালী শত্রুকেও পরাজিত করতে পারেন; মে মাসে পাকিস্তান সেটি প্রমাণ করেছে।
এমন মন্তব্যের সময় প্রেসিডেন্ট হাউসের বৈঠকে উপস্থিত অতিথিরা তাকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান। এ সময় তিনি পাকিস্তানের উন্নতির জন্য সবাইকে দোয়া করতে বলেন। অসীম মুনির বলেন, আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নিজের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
ফিল্ড মার্শাল মুনিরের এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন পাকিস্তানের ফেডারেল সরকার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (সিডিএফ) হিসেবে তার নতুন নিয়োগের পর থেকে মেয়াদ নতুন করে শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেছে। গত ১৩ নভেম্বর জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার বলেছিলেন, সিডিএফের মেয়াদ হবে নিয়োগের তারিখ থেকে পাঁচ বছর। সূত্র: জিও নিউজ।








