নতুন বছরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ লাগতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স (CFR) সতর্ক করে জানিয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেতে পারে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারে ভারত ও পাকিস্তান। সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী তৎপরতার বৃদ্ধি এবং সীমান্তজুড়ে চলমান উত্তেজনাকেই এই ঝুঁকির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সিএফআর প্রকাশিত এই মূল্যায়নটি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের ওপর পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে তৈরি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে এবং একাধিক সংঘাতের স্মৃতি ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আবারও চরমে পৌঁছেছে। চলতি বছরের মে মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত এক প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে তিন দিনের সামরিক সংঘর্ষ ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় ৬ মে রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি অভিযান চালায়। ভারত দাবি করে, ওই অভিযানে শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর জবাবে পাকিস্তান ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যেও সীমান্ত উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে অক্টোবর মাসে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) প্রধান নুর ওয়ালি মেহসুদকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের বিমান হামলার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
বিজ্ঞাপন
সিএফআর সতর্ক করে বলেছে, যদি আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলার মাত্রা বাড়তে থাকে, তাহলে ২০২৬ সালে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের মধ্যে ‘মাঝারি মাত্রার’ সশস্ত্র সংঘাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বিশ্লেষকদের মতে, যদিও আন্তর্জাতিক মহল—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র—একাধিক বৈশ্বিক সংকট যেমন গাজা, ইউক্রেন ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের সংঘাত নিরসনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে, তবুও দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যমান বিরোধগুলো এখনো কার্যকর সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে। এই বাস্তবতায় অঞ্চলটিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা আগামী দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।








