শীতের সময় ঠোঁট ও মুখে ঘা হয়? ঘরোয়াভাবেই মিলবে সবাধান

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্যাটি খুব সাধারণ হলেও, এর প্রভাবে মুখের ভেতরের সংবেদনশীল অংশেও দেখা দেয় তীব্র যন্ত্রণা। ঠোঁট ফাটা, ঠোঁটের কোণে ঘা হওয়া, এমনকি মুখ বা জিহ্বায় ছোট ছোট সাদা বা লালচে ঘা (অ্যাপথাস আলসার বা ক্যানকার সোর) এতটাই বাড়তে পারে যে ঝাল বা মশলাদার খাবার তো দূরে থাক, পানি পান করাও বেশ কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু কখনো কী ভেবেছেন, কেন শীতে এই সমস্যা বাড়ে এবং ঘরোয়া প্রতিকারই বা কী? ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতে ঠোঁট ও মুখে ঘা হওয়ার কারণ ও করণীয় সম্পর্কে।
শীতকালে মুখের এই সমস্যাগুলো বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু শারীরিক ও খাদ্যাভ্যাসগত পরিবর্তন। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া: শীতকালে সর্দি-কাশি ও জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। এই দুর্বলতার সুযোগে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে ঘা বা আলসার তৈরি করে।
বিজ্ঞাপন
পানির অভাব বা ডিহাইড্রেশন: শীতকালে আমাদের তৃষ্ণা কম অনুভূত হয়, ফলে পানি কম খাওয়া হয়। শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে মুখের লালা গ্রন্থি শুকিয়ে যায়, যা শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে (মিউকাস মেমব্রেন) ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং মুখে ঘা সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন বিটরুট খেলে যেসব উপকার পাবেন
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন: শরীরকে গরম রাখতে অনেকে অতিরিক্ত ঝাল, তেল ও মশলাযুক্ত খাবার খান। এই ধরনের খাবার পেটের সমস্যা বাড়ানোর পাশাপাশি মুখের সংবেদনশীল ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ঘা হওয়ার অন্যতম কারণ।
বিজ্ঞাপন
ভিটামিনের অভাব: শীতকালে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসায় শরীরে ভিটামিন বি১২, আয়রন, জিঙ্ক বা ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি হতে পারে, যা মুখে ঘা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।
প্রতিকার ও দ্রুত সুস্থ হওয়ার ঘরোয়া উপায়
সাধারণত, মুখের আলসার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে ব্যথা কমাতে এবং দ্রুত সুস্থ হতে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে-
বিজ্ঞাপন
পর্যাপ্ত পানি পান: শীতেও প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে মুখের লালা নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকে এবং ঘা দ্রুত শুকিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: যে কারণে শীতকালে স্ট্রবেরি খাবেন
মধু ও হলুদের ব্যবহার: এক চিমটি কাঁচা হলুদের গুঁড়োর সঙ্গে অল্প মধু মিশিয়ে ঘা-এর উপর লাগান। মধু ও হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাগুণ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
বিজ্ঞাপন
লবণ-পানির গার্গল: হালকা গরম পানিতে অল্প লবণ মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার কুলকুচি করুন। এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ঘা শুকাতে সাহায্য করে।
গ্লিসারিন বা নারকেল তেল ব্যবহার: ব্যথার জায়গায় গ্লিসারিন বা নারকেল তেল লাগিয়ে রাখুন। এতে আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং জ্বালা কমে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
বিজ্ঞাপন
যদি আলসার দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে, আকারে বাড়তে থাকে, অথবা এর সঙ্গে জ্বর ও তীব্র ব্যথা থাকে, তবে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।








