অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা

সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে প্রাথমিক শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।
বিজ্ঞাপন
রবিবার (৯ নভেম্বর) থেকে এই কর্মবিরতি কার্যকর হবে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এর আগে বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা দশম গ্রেডে বেতন বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগ অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।
বিজ্ঞাপন
সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তাদের দাবি- দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও বঞ্চিত প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দ্রুত দশম গ্রেডে বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন।
এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ, যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।
এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি ছিল ১১তম গ্রেড, তবে তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবার সরাসরি দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবিতে মাঠে নেমেছেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর, সিনিয়র স্টাফ নার্স, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, এমনকি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও দশম গ্রেডে বেতন পান, কিন্তু দেশের শিক্ষার ভিত্তি গড়ে তোলা প্রাথমিক শিক্ষকদের এখনো সেই মর্যাদা দেওয়া হয়নি।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো- ১️. দশম গ্রেড প্রদান: সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দশম গ্রেডে উন্নীত করা। ২️. উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান: চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সংক্রান্ত জটিলতা দূর করা। ৩️. শতভাগ পদোন্নতির নিশ্চয়তা: বিভাগীয়ভাবে সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আমাদের দাবি শুধু বেতনের নয়, এটি পেশাগত সম্মান ও প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। সরকার দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত আমরা শহীদ মিনার ত্যাগ করব না।
দেশজুড়ে প্রায় ৩.৫ লাখের বেশি প্রাথমিক শিক্ষক এই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। ফলে আগামীকাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আন্দোলন আরও বর্ধিত করা হবে।








