আগামী ২৭ নভেম্বর থেকেই ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা: পিএসসি

দেশব্যাপী আন্দোলন-অবরোধের মধ্যেও আগের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। কমিশন জানিয়েছে, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) শুরু হবে।
বিজ্ঞাপন
রবিবার রাত (২৩ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, লিখিত পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল আগামী ২৭ নভেম্বর। তবে এ সময়সূচি পরিবর্তন করে ‘যৌক্তিক তারিখে’ পরীক্ষার দাবিতে কিছু চাকরিপ্রার্থী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন। সর্বশেষ শনিবার (২২ ও ২৩ নভেম্বর) রবিবার রাজশাহী ও ময়মনসিংহে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করেন, যাতে টানা ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। পরীক্ষা না পেছালে অনশন শুরু করার হুঁশিয়ারিও দেন আন্দোলনকারীরা।
এ অবস্থায় রাতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে পিএসসি জানায়, পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে কিছু প্রার্থী ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং কেউ কেউ সংগঠিতভাবে অনশনেও বসেছেন। আন্দোলনকারীদের একাধিক প্রতিনিধি কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছেন, সমাবেশ করেছেন এবং কখনো কখনো কমিশন কার্যালয় ঘেরাওও করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে। প্রার্থীরা আবেদন জমা দেন ডিসেম্বর–জানুয়ারিতে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ১০ হাজার ৬৪৪ জনকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। লিখিত পরীক্ষার তারিখ ২৭ নভেম্বর–এ তথ্য কমিশন গত ৩ জুনই নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। ফলে লিখিত পরীক্ষার জন্য মাত্র দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে—এ দাবি সঠিক নয় বলে জানায় পিএসসি।
কমিশন বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলে, বিসিএসের প্রস্তুতি কোনোভাবেই পরীক্ষার দুই–চার মাসের বিষয় নয়; বরং তা দীর্ঘমেয়াদি পাঠাভ্যাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। আবেদন করার পর নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি রাখবেন—কমিশনের এমন প্রত্যাশা থাকে। ‘পরীক্ষা প্রদানে গড়িমসি বা অনীহা একজন যথার্থ সরকারি চাকরি–প্রার্থীর শৃঙ্খলাবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’—বিজ্ঞপ্তিতে এমন মন্তব্যও করা হয়।
বিজ্ঞাপন
পিএসসি জানায়, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ক্যাডার ও নন–ক্যাডার পরীক্ষার জট ও জটিলতা দূর করা তাদের বড় অগ্রাধিকার ছিল। দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া ও ফল প্রকাশ করার লক্ষ্যে বিগত মে–জুনে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়, যার আওতায় ইতোমধ্যে দুটি বিশেষ বিসিএসসহ বহু পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন কোনো পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে রোডম্যাপ অনুসরণ করা সম্ভব হবে না এবং পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটবে—এ কারণেই পরীক্ষা পেছানোর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, তারা যেন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বর থেকেই পরীক্ষায় অংশ নেন।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, এরই মধ্যে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি জানিয়ে দিয়েছে পিএসসি। কমিশনের প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) শুরু হয়ে চলবে ১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত।
দেশের ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ—এই আটটি কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পদ–সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় পরীক্ষা শুধু ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়েছে।








