খুলেছে গার্মেন্টস, কাঁচামাল সংকটে উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:০৮ অপরাহ্ন, ২৪শে জুলাই ২০২৪


খুলেছে গার্মেন্টস, কাঁচামাল সংকটে উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা
ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় গোটা দেশে। পরে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সারাদেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করে। এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। সচল হচ্ছে অফিস-কর্মস্থল ও যাতায়াত ব্যবস্থা। এরই ধারাবাহিকতায় খুলতে শুরু করেছে শিল্পকারখানা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার থেকে সারাদেশে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের সব কারখানা চালু হয়েছে। এসময়ে কারফিউ চলাকালে শ্রমিকদের আইডি কার্ডই মুভমেন্ট পাস হিসেবে গণ্য হবে।


মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসভবনে তার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা।


আরও পড়ুন: আলোচনায় বসতে রাজি সরকার: আইনমন্ত্রী


কারখানা সংশ্লিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশজুড়ে সংঘর্ষ-সহিংসতা, কারফিউ ও সাধারণ ছুটির কারণে গত কয়েকদিনে তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল সরবরাহ চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। এজন্য কারখানা খুললেও এখনই পুরোপুরি উৎপাদনে যওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার কিছু কারখানা আছে, যেগুলোতে কাঁচামাল সরবরাহ না হলে কয়েকদিন পর আর চালু রাখা যাবে না।


এছাড়া পোশাক কারখানা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সংযোগ চালুর বিষয়ে ওইদিনই তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা।


উভয় বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান, সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, সিদ্দিকুর রহমান ও আবদুস সালাম মুর্শেদী এবং বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


দুই মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে রাতেই রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা।


ওই বৈঠক শেষে জানানো হয়, স্বাভাবিক সময়ের মতোই চালু থাকবে পোশাক কারখানা। ঢাকা ও এর আশপাশের সব পোশাকশিল্প কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে শিল্পপুলিশের বিশেষ ইউনিটসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবেন। পোশাকশ্রমিকদের কারখানা থেকে দেওয়া কার্ড (আইডি কার্ড) দেখালেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহায়তা করবে।


এদিকে, কারফিউয়ের মধ্যে টানা তিনদিন বন্ধ থাকার পর গতকাল মঙ্গলবারই চট্টগ্রামের বেশিরভাগ শিল্পকারখানা খুলে দেওয়া হয়। অন্যান্য এলাকায়ও কিছু শিল্পকারখানা মঙ্গলবার চালু করা হয়। এছাড়াও একই দিন ময়মনসিংহ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভার এলাকার কিছু কিছু কারখানা সীমিত পরিসরে উৎপাদনে ফিরে।


এর আগে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ কার্যালয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় সরকারপ্রধান ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন।


আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়ের পরই ব্যবসায়ীদের একটি অংশ ওইদিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলে বন্দরনগরীর কারখানা চালুর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়। পরদিনই (মঙ্গলবার) খুলে যায় চট্টগ্রামের বেশিরভাগ শিল্পকারখানা।


সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে একপর্যায়ে ঢাকাসহ সারাদেশে সংঘর্ষ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকার গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিনগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে। গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।


পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়ছে কারফিউ শিথিলের সময়সীমা। গত মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। এদিন সরকারি-বেসরকারি সব অফিস চলবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।


জেবি/এজে