আগের রাতে বান্ধবীকে ‘সারা দেশ কাঁপাবে’ বার্তা দিয়েছিল ফয়সাল

জুলাই আন্দোলনের প্রখ্যাত নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নতুন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। হামলার আগের রাতেই শুটার ফয়সাল তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে জানিয়ে দেন, পরদিন এমন ঘটনা ঘটবে যা “সারা দেশ কাঁপাবে।” পরদিন শুক্রবার সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে রাজধানীর পল্টন এলাকার বক্স কালভার্ট রোডে প্রকাশ্য দিবালোকে হাদির ওপর গুলি চালানো হয়।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের এক সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন হত্যাচেষ্টার মাস্টারমাইন্ড। অন্তত ২০ জনের একটি সংগঠিত গ্রুপ হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র সরবরাহ, অর্থায়ন ও সীমান্ত পারাপারে জড়িত ছিল। র্যাব ও পুলিশের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ম্যাগাজিন এবং কয়েক কোটি টাকার চেক।
গ্রেফতাররা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, মোটরসাইকেলের কথিত মালিক আবদুল হান্নান, মানব পাচারে জড়িত সন্দেহে সঞ্জয় চিসিম ও সিবিরন দিও, ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. কবির, এবং ফয়সালের বাবা-মা হুমায়ুন কবির ও মোসাম্মাৎ হাসি বেগম।
বিজ্ঞাপন
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ভুয়া ছিল। হামলার পর ফয়সাল ও তার সহযোগীরা রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কর্নেল গলিতে ফয়সালের বোনের বাসায় চলে যান, যেখানে তারা নম্বর প্লেট পরিবর্তন এবং পালানোর প্রস্তুতি নেন। ফয়সালের স্ত্রী ও শ্যালক রিমান্ডে থাকাকালে দাবি করেছেন, তারা হামলার বিষয়ে পূর্বে অবগত ছিলেন না।
র্যাব-৩ মঙ্গলবার রাতে ফয়সালের বাবা-মাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে। পাশাপাশি আগারগাঁওয়ের কর্নেল গলিতে উদ্ধার করা হয়েছে হামলায় ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, একটি খেলনা পিস্তল ও ৪১ রাউন্ড গুলি।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার মো. কবিরকে ঢাকার আদালত সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন, মোটরসাইকেলটি তার মালিকানাধীন ছিল এবং হামলার অস্ত্র সরবরাহে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
হামলার সময় হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এখনও কয়েকটি সক্রিয় শুটার গ্রুপ আছে এবং তাদের খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা সংস্থার চৌকশ সদস্যরা মাঠে কাজ করছে। উদ্ধার হওয়া চেক ও অর্থের উৎস যাচাই করা হচ্ছে।








