হাসিনার মৃত্যুদণ্ড রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। সোমবার রায় ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানান।
বিজ্ঞাপন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই রায়ে ১৬ বছরের গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার দায়ীদের মুখোমুখি করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, এর মাধ্যমে দেশের বহু শহীদ ও তাদের পরিবার-পরিজনের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এই রায় আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিএনপি আগামীতেও জনগণকে ন্যায়বিচারের জন্য সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মন্তব্য করেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার যতই শক্তিশালী হোক, একদিন তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ভারতের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হোক।
মগবাজারে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রায় স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। তিনি আরও বলেন, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা প্রমাণ করেছে, সরকারের কোনো ক্ষমতাবান ব্যক্তি আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এক মাসের মধ্যে রায় কার্যকর করা জরুরি। শুধু শেখ হাসিনা নয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অভিযুক্ত সকলকে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি চাচ্ছেন রাজসাক্ষীর পাঁচ বছরের সাজার পুনর্বিবেচনাও করা হোক।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এই রায়কে ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা হিসেবে অভিহিত করেছে। সংগঠনের নেতারা বলেন, ফ্যাসিস্টদের বিচার বানচাল করতে ভারতের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব মন্তব্য করেন, এই রায় গণঅভ্যুত্থান-উত্তর আইনের শাসনভিত্তিক কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ নির্মাণের পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
বিজ্ঞাপন
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেন, রায় ১৮ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই রায় প্রমাণ করেছে, স্বৈরশাসকরাও আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে আনন্দ মিছিল করা হয়। মিছিলে অংশ নেন ডাকসুর নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা। ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম জানান, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে রায় কার্যকর করার দাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক।
বিজ্ঞাপন
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি বলেন, রায় শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের জন্য একটি নজির।
বিএনপি মহাসচিবের মেয়ে শামারুহ মির্জা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর হলে মজলুমের দোয়া পূরণ হবে।
রায় ঘোষণার পর বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা বিপ্লব উদ্যানে মিষ্টি বিতরণ ও শোকরানা নামাজ আদায় করেছেন। এনসিপি নেতাকর্মীরাও আনন্দ মিছিল করেছেন।








