‘এ বয়সে সেফ এক্সিট নিয়ে ভাবতে হয়, তা হবে দুঃখের বিষয়’

রেলপথ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জীবনের এই পর্যায়ে এসে যদি তাকে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে ভাবতে হয়, তা হবে দুঃখের বিষয়।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি লিখেন, “শিক্ষকতার সূত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের স্থায়ী নাগরিকত্বের সুযোগ পেয়েও গ্রহণ করিনি। তাই, আজ ৭২ বছর বয়সে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়।”
‘উপদেষ্টার রোজনামচা, চালকের হেলমেট নাই, ও সেফ এক্সিট’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে ফাওজুল কবির খান তার সাম্প্রতিক ভ্রমণ ও কর্মদিবসের অভিজ্ঞতা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, বুধবার সকালে ট্রেনে ভৈরব সফরে যান তিনি। সফরে তার সঙ্গে ছিলেন রেল ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের প্রতিনিধিরা। ভৈরব পৌঁছে আশুগঞ্জ রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেসময় স্থানীয়রা স্টেশনটিকে পুনরায় ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত করার দাবি জানান।
উপদেষ্টা লিখেছেন, “স্টেশনটির বেহাল অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিকভাবে রেলের মহাপরিচালককে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিই। উঁচু স্টেশনে বয়স্ক ও নারীদের ওঠানামা কঠিন, সিগনালিংসহ নানা ত্রুটি আছে, যা দ্রুত সমাধান জরুরি।”
এরপর সরাইল চৌরাস্তার পথে ভয়াবহ যানজটে পড়েন তিনি। ফাওজুল কবির লিখেছেন, “সাত-আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। পরে মোটরসাইকেলে যাত্রা করতে হয়, কিন্তু চালকদের কারও হেলমেট ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটি হেলমেট পেয়ে নিজেই তা পরে রওনা দিই।”
বিজ্ঞাপন
তিনি উল্লেখ করেন, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও বিআরটিএকে নির্দেশ দিয়েছেন।
যানজটের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, সরাইল চৌরাস্তার প্রকল্প ভারতীয় ঋণে বাস্তবায়িত হলেও ঠিকাদার চলে যাওয়ায় কাজ থেমে ছিল, এখন পুনরায় শুরু হয়েছে। তবে মূল সমস্যার কারণ চালকদের অনিয়ম ও ট্রাফিক পুলিশের শিথিলতা। এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, রাস্তা সংস্কারে ছয় দফা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ ১২ কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পোস্টের শেষাংশে তিনি উল্লেখ করেন, “আমি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনো আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুকে চাকরি বা ব্যবসায় সুযোগ দিইনি। নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে জনগণের সেবা করেছি।”
সবশেষে তিনি লেখেন, “তাই, আজ ৭২ বছর বয়সে যদি আমাকে সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তবে তা হবে গভীর বেদনার বিষয়।”