বর্তমান সরকারের অধীনে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেখছেন না জিল্লুর রহমান

জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জিল্লুর রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী ফেব্রুয়ারিতে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না। তার ভাষায়, যদি নির্বাচন হয়ও, সেটি হবে ‘ফার্সিকাল ইলেকশন’—২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ বা আরও পেছনে ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি কিংবা ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের মতো এক প্রহসনের নির্বাচন।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৯ নভেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া বিশ্লেষণে তিনি বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন—আমি কেন নির্বাচন দেখি না? তবে আমি পাল্টা জানতে চাই—আপনারা কোন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন দেখেন? নির্বাচনের প্রস্তুতি কোথায়? সরকারের সদিচ্ছা কোথায়? রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি বা তৎপরতা কী?’
জিল্লুর রহমান মনে করেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক স্থবিরতা, অর্থনৈতিক চাপ এবং নিরাপত্তা সংকট ইঙ্গিত দিচ্ছে—নির্বাচন অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। তার মতে, গত ১৪ মাসে দেশের পরিস্থিতি এমনভাবে সংকটে পড়েছে যে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন উপযুক্ত সময় ছিল, কিন্তু তা হয়নি এবং বিএনপি বিষয়টি নিয়ে সরকারের ওপর যথাযথ চাপও সৃষ্টি করতে পারেনি।
বিজ্ঞাপন
বিশ্লেষণে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক একটি স্ট্যাটাসের প্রসঙ্গও টানেন। যেখানে তারেক রহমান তাঁর মায়ের চিকিৎসা, চিকিৎসক ও প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানালেও শেষ অংশে স্পষ্ট করে বলেন—বাংলাদেশে ফিরে আসা তাঁর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল নয়; কিছু বিষয় বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের অধীনে।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘প্রথমবারের মতো তিনি স্বীকার করলেন—কেন দেশে ফিরছেন না। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে এলে তিনি ফিরবেন।’
জিল্লুর রহমানের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ বিএনপি বা তারেক রহমানের অনুকূলে নেই এবং তিনি ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি অনুমান করতে পারছেন না।
বিজ্ঞাপন
তার ভাষায়, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেখি না। এই সরকারের অধীনে সত্যিকারের নির্বাচন অসম্ভব। নানা চক্র ও কৌশলে তারা জড়িয়ে পড়েছে, আর বিএনপিও সেই ফাঁদে পা দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত, বিএনপি, এনসিপি—কে কার সঙ্গে জোট করছে তা নিয়ে বেশ তোলপাড় চলেছে। আবার হঠাৎ করেই সব কিছু থমথমে, উত্তেজনাপূর্ণ, বিপজ্জনক। এমন পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা দোহা, যুক্তরাষ্ট্র, দিল্লিসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।’
বিজ্ঞাপন
তার মতে, আগামী কয়েক দিন কিংবা কয়েক সপ্তাহ শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আর সঠিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।
জিল্লুর রহমান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তিনি দীর্ঘদিন দেশের জন্য কাজ করেছেন। হয়তো আগের মতো রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে পারবেন না, কিন্তু পরিবারের অভিভাবক ও দলের শক্তি হিসেবে তার অস্তিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জন্যও তিনি এক ধরনের শক্তি।’








