প্রকৌশলী তবিবুরের রক্তচক্ষুর নিশানায় সাংবাদিক

মো.তবিবুর রহমান তালুকদার। ছিলেন লোপাটের কারিগর বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সদস্য। সেই দাপটে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আর্শিবাদে ভাগ্য খুলে যায়। কৌশলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকল্প পরিচালকের চেয়ারে বসেন।
বিজ্ঞাপন
ওই প্রকল্পে ভয়াবহ দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগের পরও ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে আরও একটি নতুন প্রকল্পের পিডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই চেয়ারে এতো মধু। যে তবিবুর রহমানকে পিডি বানাতে হবে।
মন্ত্রনালয়ের যোগ্যতার তালিকায় তার নাম ছিলো না। হঠাৎ করে তার নাম তালিকায় স্থান পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রকৌশলীদের প্রশ্ন কি এমন জাদু। তালিকা থেকে বাদ পরা নাম কিভাবে উঠে। তিনি প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
এসব ঘটনায় তিনি পরিণত হন জনস্বাস্থ্যর মাফিয়া হিসেবে। অপরাধ বিশ্লেষকরা তাকে ‘দুর্নীতির বরপুত্র’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তবিবুর রহমান তালুকদারের আচরণ স্বৈরাচারে রূপ নিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
এখন তিনি ২৪ জন জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীদের ডিঙিয়ে প্রধান প্রকৌশলী চেয়ারে বসতে ১৫ কোটি টাকা ঘুষ চুক্তি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাহলে স্বৈরাচারী প্রকৌশলীর দাপট এখন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে।
গত কয়েকদিনে তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করলে সাংবাদিকদের প্রতিহত করতে কঠোর রক্তচক্ষু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর। টার্গেট এখন সাংবাদিক। সত্যকে আড়াল করতে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় রাজধানীতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ উঠেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাতে একটি বাহিনী গঠন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সত্য উদ্ঘাটন ঠেকাতে ও বিভিন্ন অনিয়ম আড়াল করতে তিনি একদল অস্ত্রধারী ব্যক্তিকে ব্যবহার করছেন। এই বাহিনীর হাতে ইতোমধ্যে কয়েকজন সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত হওয়ারও সত্যতা মিলেছে।
এমনকি চ্যানেল নাইনের সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাঙার চেষ্টাও করেছে তার লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এক জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক বাংলামটর এলাকায় অফিসের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎ দুটি মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন যুবক তার পথরোধ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হত্যার হুমকি দেয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘটনার পর পরই নির্বাহী প্রকৌশলী তবিবুর রহমান তালুকদার নিজেও রাত আড়াইটার দিকে ফোনে এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেন। এই ঘটনায় সাংবাদিক সমাজে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিকরা বলেন, এমন হামলা ও হুমকি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করছে এবং রাষ্ট্রের সুশাসনের জন্যও এটি অশনিসংকেত।
বিজ্ঞাপন
এক সিনিয়র সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন “সত্য তুলে ধরাই আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু আজ যারা সত্য প্রকাশে এগিয়ে যাচ্ছে, তারাই হুমকি আর সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।”
সাংবাদিক মহলের দাবি, প্রকৌশলী তবিবুর রহমান তালুকদারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শুরু হওয়া মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্পের তিনি ছিলেন প্রকল্প পরিচালক। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বিপুল পরিমাণ অর্থের অনিয়মে জড়িয়ে তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা বলেন, সত্য গোপন রাখতে এই দুর্নীতিবিরোধী প্রতিবেদনগুলোকে দমন করতেই তিনি সংবাদকর্মীদের ভয় দেখাচ্ছেন। “সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানে সত্যের ওপর হামলা। প্রশাসনের মধ্যে থাকা কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, তাহলে তা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।” অবিলম্বে ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত, অভিযুক্ত কর্মকর্তার জবাবদিহি, এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মো.তবিবুর রহমান তালুকদার হুমকি ধামকি দেন। তিনি বলেন, সংবাদ করা বন্ধ করো, বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর কপালে ভোগ আছে। আমাকে চিনিস না। আমি চাইলে তোর হাড্ডি মাংস এক করে ফেলবো। জীবন বাচাঁতে চাইলে আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি বন্ধ করো।








