ঘুরতে গেলে বাজেট শেষ? যেসব টিপসে মিলবে সমাধান

বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে উইকেন্ডে ছোট্ট একটা ট্যুর বা পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে লং ট্রিপ যেভাবেই ভ্রমণের প্ল্যান করুন না কেন, এক্ষেত্রে একটা বিষয় প্রায় সবার সঙ্গেই ঘটে। আগেভাগে কষে রাখা বাজেট শেষে গিয়ে গড়বড় করে তোলে। নির্দিষ্ট খরচের বাইরে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় দুই-তিন হাজার টাকা, এর পরিমাণ কখনো আরও বেশি। আর এই বাড়তি চাপই ভ্রমণের আনন্দ নষ্ট করে দেয়। তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখলে সহজেই খরচ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
১. হোটেল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে সাবধানতা
অনলাইনে বুকিং করতে গেলে অনেক সময় লোভনীয় অফার দেখা যায়। কিন্তু পরে দেখা যায় হিডেন চার্জ বা ট্যাক্স যোগ হয়ে খরচ বেড়ে গেছে। তাই বুকিং করার আগে সরাসরি হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে বা মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করুন। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় ডিসকাউন্ট বা বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়।
২. পর্যটক দেখলেই বাড়তি দামের অভ্যাস
বাংলাদেশের যেকোনো জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে গেলেই পর্যটকদের জন্য দাম বেড়ে যায়। হোক সেটা রিকশা-সিএনজি ভাড়া, খাবারদাবার বা স্যুভেনির শপ—সবকিছুই স্থানীয়দের তুলনায় পর্যটকদের বেশি দিতে হয়। তাই দরদাম করতে শিখুন, আর অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।
৩. যাতায়াত খরচ আগে হিসেব করুন
ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় যাতায়াতের পেছনে। অনেক সময় সঠিক রুট না জানার কারণে বা হুটহাট গাড়ি বদলানোর ফলে খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই যাত্রার আগে ট্রেন, বাস বা প্লেনের টিকিট কেটে রাখুন। প্রয়োজনে রাইড-শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করুন, এতে বাজেট নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪. পার্কিং চার্জ ভুলবেন না
নিজের গাড়ি নিয়ে ভ্রমণে গেলে আলাদা করে পার্কিং চার্জ ধরতে হবে। কারণ অনেক দর্শনীয় স্থানে ঘণ্টা বা দিনের হিসেব অনুযায়ী গাড়ী পার্কিং ভাড়া নেয়া হয়। বাজেট প্ল্যানে আগে থেকেই এ খরচ লিখে রাখলে পরে ঝামেলা কমবে।
৫. পানি ও খাবারের বাড়তি খরচ কমান
ট্যুরিস্ট স্পটে এক বোতল পানির দাম ঢাকার দ্বিগুণ বা তিনগুণও হয়ে থাকে। তাই ব্যাগে পানি, বিস্কুট, বাদাম, চকোলেটের মতো শুকনো খাবার রাখুন। এতে বাড়তি খরচ বাঁচবে, আবার প্রয়োজনে খাওয়ার মতো কিছু একটা থাকবে।
৬. সিজন এড়িয়ে ভ্রমণ
ঈদ, পূজা বা সরকারি ছুটির মৌসুমে হোটেল ভাড়া থেকে শুরু করে গাড়ি ভাড়া সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সম্ভব হলে অফ-সিজনে ভ্রমণের চেষ্টা করুন। এতে কম খরচে আরামে ভ্রমণ করা যাবে।
৭. আগে থেকে প্ল্যান করলে খরচ কমে
শেষ মুহূর্তে টিকিট কাটা বা হোটেল বুক করলে সবসময় খরচ বেশি হয়। অন্তত এক মাস আগে ট্রাভেল প্ল্যান (ভ্রমণ পরিকল্পনা) করলে অগ্রিম বুকিং ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। এতে বাজেটও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৮. ডিজিটাল পেমেন্টে ক্যাশব্যাক সুবিধা
অনেক সময় ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহার করলে হোটেল বুকিং বা টিকিট কেনায় ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়। এসব অফার কাজে লাগাতে পারলে কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় সম্ভব।
ভ্রমণ মানেই শুধু নতুন জায়গা দেখা নয়, বরং আনন্দের স্মৃতি তৈরি করা। কিন্তু বাজেট ভেঙে গেলে সেই আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। তাই একটু সচেতনতা আর আগেভাগে পরিকল্পনা করে নিলে ভ্রমণ হবে নির্ঝঞ্ঝাট ও বাজেট-ফ্রেন্ডলি।
বিজ্ঞাপন
