খুলে দেওয়া হচ্ছে সেন্টমার্টিন, মানতে হবে ১২টি শর্ত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা সম্প্রতি ১২টি নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। এই প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রণীত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা’-র ভিত্তিতে কার্যকর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘুরে আসতে পারেন ভোলার তারুয়া দ্বীপ, যেভাবে যাবেন জেনে নিন

প্রজ্ঞাপনের শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েবপোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধুমাত্র দিনের বেলায় দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন; রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত কাটানোর অনুমতি থাকবে, কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটকই দ্বীপে যেতে পারবেন।

সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সৈকতে রাতের আলো, শব্দ বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ। কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়ার ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচলও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।

আরও পড়ুন: রাঙ্গাবালীর চরহেয়ার দ্বীপে বিদেশী পর্যটকদের পদচারণা

পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ পলিথিন বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান, শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক এবং ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল বহন নিরুৎসাহিত। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকার আশা করছে, এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিনের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠবে।