Logo

কৃত্রিম সংকটে নন-ইউরিয়া সার, বিপাকে লালমনিরহাটের কৃষকরা

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
লালমনিরহাট
২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩:৩৩
4Shares
কৃত্রিম সংকটে নন-ইউরিয়া সার, বিপাকে লালমনিরহাটের কৃষকরা
ছবি: প্রতিনিধি

​শীতকালীন ফসল মৌসুমকে সামনে রেখে লালমনিরহাটে দেখা দিয়েছে টিএসপি, ডিএপি ও এমওপির মতো নন-ইউরিয়া সারের তীব্র সংকট।

বিজ্ঞাপন

ডিলারদের কাছে সার না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার হাজারও কৃষক। সময়মতো জমিতে সার দিতে না পারায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

​তবে কৃষি বিভাগ এই সংকটকে কৃত্রিম বলে দাবি করছে। তাদের মতে, জেলায় সারের কোনো ঘাটতি নেই। বিএডিসি গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুদ থাকলেও কিছু অসাধু ডিলার বেশি মুনাফার লোভে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারে দাম বাড়াচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

​জমিতে আলু ও ভুট্টা রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু সার না পাওয়ায় জমি প্রস্তুতের কাজ আটকে আছে। কর্ণপুর গ্রামের কৃষক আবদার হোসেন বলেন, ডিলারদের কাছে সারের জন্য গেলে তারা বলেন সার শেষ। কিন্তু সেই সারই খুচরা দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে আমাদের প্রতি কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেশি দাম দিতে হচ্ছে।

​একই অভিযোগ করেন পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া এলাকার কৃষক আবু তালেব। তিনি বলেন, নন-ইউরিয়া সার ছাড়া জমি প্রস্তুত করা যাচ্ছে না। এখন সারের সবচাইতে বেশি দরকার। নভেম্বরে সারের চাহিদা আরও বাড়বে। সময়মতো সার না পেলে আমাদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

​বিএডিসি লালমনিরহাট গুদামের সহকারী পরিচালক একরামুল হক জানান, জেলায় ১৪৪ জন ডিলারের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত দরে সার বিক্রি হয়। সরকার ডিলারদের কাছে প্রতি কেজি টিএসপি ২৫ টাকা, ডিএপি ১৯ টাকা ও এমওপি ১৮ টাকা দরে বিক্রি করে। ডিলাররা কেজিতে ২ টাকা লাভ রেখে কৃষকের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

​তিনি বলেন, সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী সব সার আমাদের গুদামে রয়েছে। ডিলাররা নিয়মমাফিক সার উত্তোলন ও বিক্রি করছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, চাহিদার তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ সার কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী সারের কোনো সংকট নেই। বিএডিসি গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুদ রয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার আশায় এই কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

​কৃষি বিভাগের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিলাররা। হারাটি ইউনিয়নের সার ডিলার আবু তাহের বলেন, সরকার যে পরিমাণ সার বরাদ্দ দেয়, আমরা নির্ধারিত দরেই তা কৃষকের কাছে বিক্রি করি। কেউ বেশি দরে বিক্রি করে না। ডিলারের সার খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কীভাবে যায়, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুচরা বিক্রেতারা কোথা থেকে সার পান, সেটা আমাদের জানা নেই।

​লালমনিরহাট জেলা সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল হাকিম সংকটের জন্য বরাদ্দের স্বল্পতাকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় এই সংকট তৈরি হয়। বিশেষ করে চরাঞ্চলে এখন প্রচুর জমিতে ফসল উৎপাদন হচ্ছে, ফলে সারের চাহিদাও আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

​তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালের সার নীতি ঠিক রেখে চাহিদামতো সার সরবরাহ করলে সংকট থাকবে না। তবে কোনো ডিলার যদি সত্যিই সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন, তাহলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

জেবি/এসএ
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD